ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নিউইয়র্ক

প্রবাসীদের মন জয় করে নিলেন ড্যান মজীনা

শিহাবউদ্দীন কিসলু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৪
প্রবাসীদের মন জয় করে নিলেন ড্যান মজীনা

নিউইর্য়ক: ‘টাউন হল মিটিং’ এ নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশেশিদের মন জয় করে নিলেন ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তে বাংলাদেশের উজ্জল সম্ভাবনা ও  গুরুত্ব তুলে ধরে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ ড্যান মজীনা’র ‘সোনার বাংলাদেশ‘  দেখার আশা জাগিয়েও আর ‘জয় বাংলা’  শ্লোগান দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রীতিমত সম্মোহিত করে ফেলেন তিনি।



রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের এলমর্হাস্ট এর নিউটাউন পাবলিক  স্কুলে প্রবাসী বাংলাদেশিদর নিয়ে আয়োজিত টাউন হল মিটিংয়ে বাংলাদেশ এর সম্ভাবনা এবং বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে দেখে সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া প্রশ্নোত্তর পর্বে  তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

এদিকে ভুমিকা বক্তব্যে কংগ্রেস ওম্যান গ্রেস মেং বলেন, প্রবাসীরা সবাই দেশে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকেন। বাংলাদেশের মানুষ নিরাপদে নেই। তিনি প্রবাসে বাংলাদেশিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে তার উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন,  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে তিনি হাউজে একটি বিল এনেছেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে  রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা বলেন,  বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবস্থানের কোনই পরিবর্তন হয়নি। তবে  দুই নেত্রীকেই সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, বাংলাদেশে রাজনীতি চর্চায় সবার জন্য সমান সুযোগ যেমন সৃষ্টি করতে হবে,  তেমনি সেই সুযোগকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গেই ব্যবহার করতে হবে। সহিংসতা,  সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন,  নারী নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।

ড্যান মজীনা বলেন,  সবকিছু সহজ নয় আমরা জানি,  আমলাতন্ত্রের লাল ফিতা,  দুর্নীতির কথাও জানি। কিন্তু এসবের সমাধান নেই এমন নয়। বাংলাদেশের সব সমস্যাই সমাধান  যোগ্য।

তিনি  সবাইকে ‘বাংলাদেশ ছোট্ট একটি অনুন্নত দেশ’ এমন ভাবনা মাথা থেকে ঝেড়ে দূর করে ফেলার আহবান জানান।

‘বাংলাদেশ ম্যাটারস’ টু আমেরিকা অর্থাৎ আমেরিকার জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ইজ দ্য মডারেট,  টলারেন্ট সেক্যুলার অলটারনেটিভ অব ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম। ’

মায়ানমার ও চীন বিবেচনায়  ‘সহিংস  উগ্রবাদের বিকল্প বাংলাদেশ’ এর আঞ্চলিক কৌশলগত ভুমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলনে,  ভিশন ২০২০ নয়,  বিশ্বাস করেন ২০৩০ সালে মধ্য আয়ের দেশ, শান্তির দেশ,  গণতন্ত্রের দেশ হবে বাংলাদেশ। বিশ্বের শীর্ষ গার্মেন্টস রপ্তানিকারক দেশ হবে বাংলাদেশ। ‘গ্লোবাল ব্রান্ড’ হবে বাংলাদেশের  পণ্য।

তিনি আরো বলেন, নিজেই বিকিশিত হবে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প। এবং বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ‘শীর্ষ ব্রান্ড’ হবে বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস।
এছাড়া মজিনা বলেন, এশীয়ান টাইগার, রয়েল বেঙ্গল টাইগার হবে ‘বাংলাদেশ’ বিশ্ব অর্থনীতিতে। চট্রগাম বন্দরে এখন আর আগের মত সমস্যা নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস প্রসঙ্গে প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন,  সরকারের সিনিয়র নেতারা যখন বলেছেন, গ্রামীণ চ্যাপ্টার ইজ ক্লোজড,  আমি আশাবাদী হয়েছি। গ্রামীণ উত্তরোত্তর বিকশিত হবে। দারিদ্র দূরীকরণে আমরা গ্রামীণের আদর্শে বিশ্বাসী ।

বাংলাদেশে রাশিয়া ও ভারতের প্রভাব সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে তিনি প্রশ্নকারীকে ওই দুই দেশের কাছে প্রশ্নের পরামর্শ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সরকারই বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক যেকোন সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশী শক্তিশালী।

এ প্রসঙ্গে  তিনি আরো বলেন, ২০১২ সালে হিলারী ক্লিনটনের সফরের মধ্য দিয়ে অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্কেও সংলাপ শুরু হয়েছে। এখন প্রতি বছরই চলছে। জুনে তৃতীয় দফা আলাচনা হবে । আগামী ২২ এপ্রিল প্রথম রাউন্ড সিকিউরিটি  ডায়ালগ হবে,  অক্টোবরে হবে মিলিটারি বিষয়ে সহযোগিতার আলোচনা। এগুলো কি প্রমাণ করে না দু’দেশের সম্পর্ক সম্পর্ক কেমন।

এছাড়া নৌ বাহিনীতে যুক্তরাষ্ট্র একটি জাহাজ দিয়েছে উল্লেখ করে মজীনা বলেন,  আমি বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দুটি জাহাজ চাই। সমুদ্রসীমা রক্ষায় বাংলাদেশ স্বাবলম্বী হবে এটাই তাদের চাওয়া বলেন তিনি।

যুদ্ধাপরাধীদের  বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস  করে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তাদেরকে আইনের কাছে দায়বদ্ধ হতে হবে। কিন্তু দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে তাদের বিচার প্রক্রিয়া দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেজন্যই স্টিভেন ৠাব ৫ দফায় বাংলাদেশ সফর করেছেন।

বাংলাদেশের মানুষকে বিশ্বের সবচেয়ে ভালো মানুষ উল্লেখ করে মজীনা বলেন,  সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমত হলো বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৬ ঘণ্টা,  মার্চ ১৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ