ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নিউইয়র্ক

মৃত্যুর আগে মহিউদ্দীন ৯১১ নম্বরে কল করেন!

শিহাবউদ্দীন কিসলু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৪
মৃত্যুর আগে মহিউদ্দীন ৯১১ নম্বরে কল করেন!

নিউ ইয়র্ক: নিউ ইয়র্কে বহুল আলোচিত বাংলাদেশি খুনের ঘটনায় নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের রাসেল সিদ্দিকীকে (২৭) গ্রেফতার করেছে নিউ ইয়র্ক পুলিশ। স্থানীয় সময় বুধবার ভোররাতে ভাড়াটিয়া রাসেল তার বাড়ির মালিক মহিউদ্দিন মাহমুদ দুলাল হত্যাকান্ডের অভিযোগে গ্রেফতার হন।



এদিকে বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তে দুলাল পুলিশের জরুরি নম্বর (৯১১) ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। মহিউদ্দীন দুলালের টেলিফোন কলের সূত্র ধরেই পুলিশ প্রথমে মহিউদ্দীন দুলালের অবস্থান শনাক্ত করে এগিয়ে এসেছিল।

কিন্তু সে সময় মহিউদ্দীনের বাড়ি থেকে দুজন ভাড়াটিয়াকে জিজ্ঞাসা করে কোনো কিছু জানতে না পেরে আশেপাশে অনুসন্ধান অব্যাহত রাখে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে মহিউদ্দীনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

রাসেল সিদ্দিকীকে গত সোমবার রাতে ব্রুকলিনের বাংলাদেশি মহিউদ্দিন মাহমুদ দুলাল (৫৭) হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে নিউ ইয়র্ক পুলিশ নিশ্চিত করেছে।

তবে নিউ ইয়র্ক পুলিশ মামলার স্বার্থে এসবের বাইরে আর কোনো তথ্য জানায়নি। পুলিশ শুধু বলেছে, রাসেল সিদ্দিকী মহিউদ্দীন দুলালের বেসমেন্টে ভাড়া থাকতো।

তার বিরুদ্ধে ‘অপরাধ সংঘটনে অস্ত্র রাখা’র দায়ে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে রাসেল এর পক্ষে কোনো আইনজীবী নিয়োগ হয়েছে কি-না তা এ রিপোর্ট লেখা অবধি সুনিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্ট ব্রুকলিনের বাংলাদেশিরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, মহিউদ্দিন মাহমুদ দুলালের ভাড়াটিয়া যুবক রাসেল বিপুল অর্থ লুটের জন্যই মহিউদ্দিন দুলালকে হত্যা করে তার টাকা-পয়সা নিয়ে পালাতে চেয়েছিল।

আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার তদন্ত সহায়তায়স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে কমিউনিটি নেতারা গিয়ে জেনেছেন, মৃত্যুর আগে দুলাল পুলিশের জরুরি নম্বরে (৯১১) ফোন করে হেলপ মি, হেলপ মি বলে সাহায্য চেয়েছিল।

এ সূত্র ধরেই প্রথমে পুলিশ স্যাটালাইটের মাধ্যমে দুলালের অবস্থান শনাক্ত করে দুলালের বাসায় এসে জানতে চায় এ বাসা থেকে কেউ ফোন করেছে কি না বা কোনো ঘটনা ঘটেছে কি না। তখন কেউই পুলিশকে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি।

এদিকে সূত্রগুলো বলছে, পুলিশের বিবরণ অনুযায়ী বাসা থেকে বের হওয়ার পরই পথেই এ রাসেলও নাকি পুলিশের প্রশ্নের মুখোমুখি হন। কিন্তু সে তখন পুলিশকে জানায়, এ বাসায় কিছুই ঘটেনি। পুলিশ ওই সময় ফিরে যায় এবং তদন্ত অব্যাহত রাখে।

এরপর মহিউদ্দীন দুলালের ছোট ভাই কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরতেই ভাইয়ের মৃত্যুর কথা জানতে পারে। বাড়ির বেসমেন্টের সিড়ির গোড়ায় মহিউদ্দীনের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। এ মৃত্যুর খবর দ্রুতই ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ এসে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

প্রসঙ্গত, মহিউদ্দিন মাহমুদ দুলালের (৫৭) বাড়ি বাংলাদেশের চট্রগ্রামের সন্দ্বীপে। তার বাবা রহমতপুরের কারগিল গর্ভমেন্ট হাই স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন। মহিউদ্দিন মাহমুদ দুলাল স্ত্রীসহ যথাক্রমে ২০, ৯ এবং ৪ বছর বয়সী তিন সন্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতেন। দুলালের বাড়ির বেসমেন্টে ভাড়া থাকতেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের অভিযুক্ত রাসেল।

বাংলাদেশ সময় ২২৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৪
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ