ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মেঘনায় মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে ‘কম্বিং অপারেশন’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২২
মেঘনায় মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে ‘কম্বিং অপারেশন’ কম্বিং অপারেশন

চাঁদপুর: চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে বছর জুড়ইে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালসহ অন্যান্য জাল দিয়ে দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ শিকার করেন জেলেরা। ইলিশ সম্পদ উৎপাদনের লক্ষ্যে বছরে দুই বার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও ছোট রেনু পোনা ধরা অব্যাহত থাকে।

সময়ের সঙ্গে জেলেরাও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন। মাছ শিকারে ব্যবহার করছে নতুন নতুন ফাঁদ। নির্দিষ্ট সময়ের পর নদীতে মাছ ধরায় কঠোর থাকে না টাস্কফোর্স। তবে এখন ইলিশ সম্পদ উন্নয়নসহ দেশীয় মাছ রক্ষায় বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী ও অনান্য ক্ষতিকর জাল, জাগ এবং নিষিদ্ধ চাই অপসারণে ‘বিশেষ কম্বিং অপারেশন’ শুরু হয়েছে। এসব অপারেশনে জব্দ মাছ ধরার নিষিদ্ধ ফাঁদ ও আটক ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার জন্য অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত আছে। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চারটি ধাপে জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় মেঘনা নদীতে উপজেলা ও জেলা টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করবে।

চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেছ, নতুন বাজার, বিপনীবাগ বাজার, পাল বাজার, পুরান বাজার মাছ বাজার, সদরের আনন্দ বাজার, লালপুর বাজার, দোকানঘর, বহরিয়া বাজার, হরিণা ফেরিঘাট, আখনের হাট, হাইমচরের কাটাখালি, হাইমচর বাজার, আমতলি ও চরভৈরবী বাজার ঘুরে ছোট রেনু পোনা বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে শীত মৌসুমে বেশি আমদানি হয় রেনু পোনার। শহরের অলি-গলিতে এবং গ্রামাঞ্চলে ফেরি করে এসব রেনু পোনা বিক্রি করে জেলে ও খুচরা মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

হাইমচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের পর আমরা দু’দিন অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ৩ লাখ ২০ হাজার মিটার জাল জব্দ করেছি। দু’টি অবৈধ জাগ অপসারণ করা হয়েছে। মূলত এ সময়ে নদীতে ছোট ফাঁদের বেহুন্দি জাল, মশারি জাল, চরঘেরা জাল, বেড় জাল এবং ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার অপেক্ষা ছোট ফাঁসের ইলিশ জাল দিয়ে জেলেরা ছোট প্রজাতির সব ধরনের মাছ শিকার করেন। যা আমাদের মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন ও উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবে উপজেলা টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে আমরা কঠোরভাবে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

চাঁদপুর সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ কম্বিং অপারেশন অব্যাহত রেখেছি। গত চারদিনে আমরা পদ্মা-মেঘনা নদীর সদর এলাকায় আটটি বেহুন্দি জাল, একটি মশারি জাল ও ১০ লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করেছি। জব্দ করা হয় জাটকাও। পর্যায়ক্রমে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।  

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ছোট মাছ ধ্বংসকারী ফাঁদগুলো আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। জেলেরা আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে মাছ শিকারের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে বিদেশ থেকে এখন জাল ক্রয় করছেন। ছোট ফাঁদের জালগুলো মুন্সিগঞ্জেও তৈরি হয়। এসব ফাঁদ শুধুমাত্র ইলিশ নয়, সব ধরনের দেশীয় প্রজাতির মাছের রেনুগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে। যার কারণে সরকার বিশেষ কম্বিং অপারেশন করার নির্দেশনা দিয়েছে। জলে ও স্থলে আমরা সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করলে অবশ্যই মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং জাতীয়ভাবে মৎস্য উৎপাদনে সহায়তা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।