ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বদলে গেছে রাঙামাটির জনপদ

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২০
বদলে গেছে রাঙামাটির জনপদ

রাঙামাটি: পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি এক সময় দুর্গম হওয়ার কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত নাজুক। এ অঞ্চলে উন্নয়ন করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ছিল।

এর সুযোগ নিয়ে এ এলাকায় বেড়ে গেছে পাহাড়ি সন্ত্রাস। সন্ত্রাস দমনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকেও চরম বেগ পেতে হয়। তাই স্থানীয় মানুষের চাহিদা ছিল- এ অঞ্চলে যদি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা যায়, তাহলে উন্নয়নের গতি কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১০ বছরে রাঙামাটির যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে নির্মাণ করা হয়েছে সেতু, কালভার্ট এবং সড়ক।  

চেঙ্গী সেতু:রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে চেঙ্গী নদীর ওপর (কাপ্তাই হ্রদ) ৪৮৭ মিটার দীর্ঘ ‘চেঙ্গী সেতু’ নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি দিয়ে নানিয়ারচর-লংগদু এবং বাঘাইছড়ি উপজেলা অর্থাৎ তিনটি উপজেলা যুক্ত হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের ফলে তিনটি উপজেলার প্রায় কয়েক লাখ মানুষ খুব সহজে জেলা সদরের সঙ্গে কম সময়ে যোগাযোগ করতে পারবে। এতে সময় বাঁচবে অনেক, যোগাযোগ হবে খুব দ্রুত। ব্যবসা-বাণিজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হবে।

আসামবস্তী-ব্রাক্ষণটিলা সংযোগ সেতু:স্থানীয় মানুষের দাবির ভিত্তিতে বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাঙামাটি শহরের আসামবস্তী-ব্রাক্ষণটিলা সংযোগ সেতুটি নির্মাণ করে দেয়। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ খুব সহজে চলাচল করছে। সেতু নির্মাণের আগে নৌকায় করে অত্যন্ত কষ্ট করে যাতায়াত করতে হতো।

ঝুলইক্যা পাহাড়-পুরানবস্তী- রিজার্ববাজার সংযোগ সেতু:দ্বীপ এলাকা ঝুইক্যা পাহাড় এবং পুরানবস্তী এলাকায় দু’টি সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে। সেতুর কাজ শেষ হলে দু’এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এর সুফল ভোগ করবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়ে যাবে। কাজটি বাস্তবায়ন করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড।

আসামবস্তী-কাপ্তাই সংযোগ সড়ক:রাঙমাটি শহরের আসামবস্তী-কাপ্তাই উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ আরো সহজ করতে বর্তমান সরকার এলজিইডির অধীনে ৩৩ কোটি ২৮ লাখা টাকা ব্যয়ে ১৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করে দিচ্ছে। সড়কটি কাজ শেষ হবে ২০২১ সালের শেষে দিকে। সড়কের কাজ শেষ হলে রাঙামাটি-কাপ্তাই উপজেলার কয়েকলাখ মানুষ দ্রুত সময়ের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারবে।

মাইনীমুখ-গাঁথাছড়া সংযোগ সেতু:

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার মাইনীমুখ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে বর্তমান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে কাচালং নদীর ওপর ৩৪৪ মিটার দীর্ঘ এবং ৭ দশমিক ৫০ মিটার প্রশস্ত সেতু নির্মাণ করেছে। সেতুটি হওয়ায় মাইনীমুখ-গাঁথাছড়া এলাকার প্রায় ১২ হাজার মানুষ সুবিধা ভোগ করছে।

এছাড়া দুর্গম বাঘাইছড়ি উপজেলার পর্যটন নগরী সাজেক সড়ক, সিজকমুখ-উদয়পুর সীমান্ত সড়ক, ঠেগামুখ স্থলবন্দর সড়কের কাজ চলছে।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও রাঙামাটি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ফিরোজা বেগম চিনু বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের সরকার। জনগণের উন্নয়নে শেখ হাসিনার সরকার দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। তাই সমতল থেকে পাহাড় সব স্থানে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে এ সরকারের আমলে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বাংলানিউজকে জানান, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাঙামাটিতে শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা অতীতে কোনো সরকার করতে পারেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৭  ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।