ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

যমুনায় বিষ ঢেলে চিংড়ি শিকার!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৯
যমুনায় বিষ ঢেলে চিংড়ি শিকার! যমুনা থেকে শিকার হওয়া চিংড়ি। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: যমুনা মানেই বিস্তীর্ণ জলরাশি। হিংস্র এ নদীর থাবায় বিলীন হয়েছে অসংখ্য জনবসতি। আবার যমুনা বুক উজাড় করে দেয় মানুষকে। বর্তমানে বিশাল জলরাশিখ্যাত যমুনার বুকে জেগে উঠেছে ছোট-বড় অনেক চর। 

পানি কমে যাওয়ায় যমুনায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরায় মেতেছেন জেলেসহ মাছ শিকারিরা। তাদের প্রধান টার্গেট যমুনার চিংড়ি শিকার করা।

কারণ বাজারে যমুনার চিংড়ির দাম বেশি।
 
তবে তাদের মাছ শিকারের পদ্ধতি অনেকটা আলাদা। মাছ শিকার করতে নদীতে এক ধরনের বিষ (বিষাক্ত পদার্থ) প্রয়োগ করেন শিকারিরা। সময়ের ব্যবধানে চিংড়িগুলো দুর্বল হয়ে গভীর পানি থেকে ভেসে আসে যমুনার কূলে। এরপর সেই চিংড়ি নানা কায়দায় সংগ্রহ করেন শিকারিরা। বিষ প্রয়োগে মাছ ধরায় প্রাকৃতিকভাবে মাছের বংশ বিস্তার হচ্ছে বাধাগ্রস্ত।  

বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের ওপর দিয়ে অতিবাহিত যমুনা নদীতে এ প্রক্রিয়ায় প্রতিনিয়ত মাছ শিকার করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মাছ শিকারি ও জেলেরা। এছাড়া সারিয়াকান্দি উপজেলায়ও যমুনা নদী থেকে একই কায়দায় চিংড়ি শিকার করা হচ্ছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা ও ভোরে যমুনার পানিতে বিষাক্ত পদার্থ প্রয়োগ করে জেলেরা। বিষ প্রয়োগের মাছগুলো দুর্বল হয়ে পানিতে ভেসে ওঠে। পরে সেগুলো জাল ও মশারির সাহায্যে সংগ্রহ করেন তারা। প্রতি বছর এ পদ্ধতি মাছ শিকার করেন জেলেরা।  

যমুনা পাড়ের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, প্রতিবছরের এ সময়ে যমুনায় বিষ প্রয়োগে চিংড়ি শিকার করা হয়ে থাকে। বড় চিংড়িগুলো শিকারিরা ধরেন। আর ছোটগুলো পানিতে ভাসতে ভাসতে এক সময় মরে যায়। এর সঙ্গে অন্য প্রজাতির ছোট মাছগুলোও মারা পড়ে বলে জানান জহুরুল ইসলাম।
 
অপর বাসিন্দা আয়নাল হক বাংলানিউজকে জানান, যমুনায় বিষ প্রয়োগ করে চিংড়ি ধরা নতুন কোনো ঘটনা না। প্রত্যেক বছর এ সময়ে প্রভাবশালীরা যমুনা থেকে এভাবে চিংড়ি শিকার করে থাকেন। এসব বলা আর না বলা সমান কথা। কারণ বিষয়টি নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই যোগ করেন যমুনা পাড়ের এ বাসিন্দা।
 
মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বাংলানিউজকে জানান, যমুনাসহ উন্মুক্ত জলাশয়ে বিষ ঢেলে মাছ শিকার করা দণ্ডণীয় অপরাধ। এভাবে মাছ শিকার করলে অনেক মাছ মারা যায় নষ্ট হয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্র। যা জীববৈচিত্র্যর জন্য মারাত্মক হুমকি।
 
তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে শিগগিরই এসব ব্যক্তি ও জেলেদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি আইনের আওতায় এনে তাদের উপযুক্ত শাস্তির বিধান করা হবে।       
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৯
এমবিএইচ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।