ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যবসায়ীদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যবসায়ীদের

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় সবসময় বঙ্গবন্ধুকন্যার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন।

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক এবং দুর্নীতির প্রতি শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রতি সমর্থন করে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শান্তি সমৃদ্ধির দেশ গড়ার মাইলফলক।

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ব্যবসায়ী সম্মেলনে তারা এ কথা বলেন।

 

** যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার ইচ্ছে নেই

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্সের (আইসিসি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির, এমসিসিআইয়ের সভাপতি নিহাত কবীর, সাবেক সভাপতি রোকেয়া আফজাল রহমান, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলি, মাইক্রোসফট বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী সোনিয়া বশীর কবির, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, বিএসআরএম স্টিলের চেয়ারম্যান আলী হুসেন আকবর আলী, বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ, এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুপালী চৌধুরী, মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক, বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর প্রমুখ।

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনুন
নির্বাচনে দেশের সব ব্যবসায়ীকে হাতে হাত মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।

দেশের শীর্ষস্থানীয় এ শিল্পপতি বলেন, ‘আমি শুধু সারাদেশের ব্যবসায়ীদের একটা কথাই বলবো, আজকে আমরা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকবো? নাকি স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে থাকবো? যদি আমরা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকি আপনারা সারাদেশের সমস্ত ব্যবসায়ী সবাই একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনুন। ’ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।  ছবি: পিআইডিবসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজকে অত্যন্ত আনন্দের দিন, দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা আজ এখানে। সবাই এক পতাকা তলে সমবেত হয়েছি। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আজকে আমাদের মাঝে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির সন্তান জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মাঝে উপস্থিত। ’  

‘বঙ্গবন্ধুর নাম এদেশে লক্ষ কোটি বছর থাকবে। উনি সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছেন। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করছেন। আজ আমরা সারাবিশ্বে সবার কাছে ইর্ষণীয়, সারাবিশ্ব বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে- কিভাবে তারা জিডিপি প্রবৃদ্ধি আটে নিয়ে গেলো। ’

আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘অনেকে তার উন্নয়নের কথা বলেছেন। আমি এ বিষয়ে বলবো না। আমি শুধু ওনার মানবতার একটা দিক বলবো। আজকে প্রধানমন্ত্রী যদি না চাইতেন একজন রোহিঙ্গাও এদেশে ঢুকতে পারতো না। উনি মানবতার যে উৎকৃষ্ট প্রমাণ দিলেন লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে এখানে বসবাস করতে দিচ্ছেন। তাদের খাওয়া পরা সব কিছুর উনি টেক-কেয়ার করছেন। ’ 

বসুন্ধরা সিটিতে আগুন লাগার সময়কার সহযোগিতার কথা স্মরণ করে গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ‘১০ বছর আগের একটা কথা মনে পড়ে গেল এই মুহূর্তে। তখন বসুন্ধরা সিটিতে আগুন লেগেছিল। তিনি নিজে এর মনিটর করেছিলেন, তিনি রাতে বেলা সেনাবাহিনী দিয়ে পুরো বসুন্ধরা পাহারার ব্যবস্থা করেছিলেন। অন্যথায় বসুন্ধরা সিটি হয়তো সেদিনই শেষ হয়ে যেতো। তিনি হেলিকপ্টার পাঠিয়েছিলেন, আমাদের বেশ কিছু লোককে উদ্ধার করেছিলেন। আমি অবশ্য তখন বাংলাদেশে ছিলাম না। এই যে মহান নেত্রী, উনি যে সবার মা, সবার বোন- এটাই তার একটা প্রমাণ। ’ 

বিদ্যুতে সরকারের উন্নয়নের প্রশংসা করে আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, ‘মিরসরাইতে আমরা ৫০০ একর জায়গা নিয়েছি। একটা হেভি ইন্ডাস্ট্রি করার জন্য। আমার ছোট ছেলে বেপজার চেয়ারম্যানকে বলেছে আমাদের ৪০০ মেগাওয়াট পাওয়ার লাগবে। বললো কোনো সমস্যা নাই আপনাদের ৪০০ মেগাওয়াট পাওয়ার দেবো। ২০০৮ সালে আমরা যখন বিদ্যুৎ চাইতাম এক মেগাওয়াট পাওয়ার চাইলে এক বছরে পাওয়া যেতো না। আজকে ৪০০ মেগাওয়াট পাওয়ার চাইলাম তিনি সঙ্গে সঙ্গে বললেন কোনো সমস্যা নাই। ’ 

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে আপনারা সবাই ব্যবসা করেন। এদেশে ব্যবসা করা যতো সহজ বিদেশে ব্যবসা করা এতো সহজ না। এই সরকার যদি থাকে, আপনাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দেবে। যেন আমরা বিশ্ব দরবারে বলতে পারি, আমরা বাঙালি জাতি অনেক শক্তিশালী জাতি। আমরা আজকে মাথা উঁচু করে বলতে পারি- আমরা আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড কারও চেয়ে কম না। আমরা ইনশাল্লাহ এদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। ’

এ সরকারের সময় কোনো ‘হাওয়া ভবনে’ যেতে হয়নি
আওয়ামী লীগ সভাপতির উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, শেখ হাসিনার সরকার দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে। তার দরজা দলমত নির্বিশেষে সবার জন্য সবসময় খোলা থাকে। ব্যবসায়ীরা যে কোনো প্রয়োজনেই তাকে কাছে পেয়ে থাকেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি: পিআইডিবর্তমান সরকারের উপদ্রবহীন ব্যবসাবন্ধব পরিবেশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেউ বলতে পারবেন না, ব্যবসা করতে গিয়ে কোনো রূপ প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন বা হাওয়া ভবনের মতো চাঁদা গুণতে হয়েছে।

শেখ হাসিনা ব্যবসায়ীদের শেষ ভরসাস্থল
এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা চাই দেশের চলমান উন্নয়নের গতিধারা এবং ব্যবসায়ীদের জন্য বিদ্যমান ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ দেশে বজায় থাকুক। ’

তিনি বলেন, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এমন নেতৃত্ব চায় যিনি কি-না দূরদৃষ্টি সম্পন্ন, সাহসী এবং যার দুয়ার সবসময় ব্যবসায়ীদের জন্য অবারিত থাকবে। শেখ হাসিনা এমনই একজন ব্যক্তিত্ব, তিনি যে কোনো সমস্যায় ব্যবসায়ীদের শেষ ভরসাস্থল।

মহিউদ্দিন বলেন, আমার সামনে যারা বসে আছেন। আপনারাই বাংলাদেশকে বদলে দিতে পারেন। আর এর দিক নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে রাজনীতিতে কোনো জ্বালাও-পোড়াও-নৈরাজ্য দেখতে চাই না।

অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতাদের বক্তব্যেও ফুটে উঠে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশের প্রত্যাশা।

জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানে গত ১০ বছরে দেশের বিভন্ন সেক্টরে উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও চিত্র উপস্থাপন করা হয়।

দেশের শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তাবৃন্দ, সিইও, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আমদানি-রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, তথ্যপ্রযুক্তি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন সেবাখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংগঠনের কর্তাব্যক্তিরা সম্মেলনে যোগ দেন।  
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৮ 
এমইউএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।