ঢাকা, শনিবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাবির প্রবেশপথে প্রতিবন্ধক বসানোয় কারো ভোগান্তি, কারো স্বস্তি

ইউনিভার্সিটি করেস্পন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
ঢাবির প্রবেশপথে প্রতিবন্ধক বসানোয় কারো ভোগান্তি, কারো স্বস্তি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের চাওয়া অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথগুলোতে ব্যারিয়ার বা প্রতিবন্ধক  বসিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে বাইরের যান চলাচল করতে পারছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্ত আগে জানানো হয়নি। ফলে অনেকেই ক্যাম্পাস এলাকায় এসে ভোগান্তিতে পড়েছেন। তাদের অনেকে বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত আগেই জানানো উচিত। তাহলে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ক্যাম্পাসে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য সাতটি প্রবেশদ্বারে স্থাপিত ব্যারিয়ার এবং সিকিউরিটি অ্যান্ড সার্ভিলেন্স বক্স উদ্বোধন করেন উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান। শুক্রবারই প্রথমবারের মতো এ ব্যরিয়ারগুলো সচল করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশীর মোড়, নীলক্ষেত মোড়, শহীদ মিনার, শাহবাগ, শহীদুল্লাহ হল, হাইকোর্ট মোড় এবং শিববাড়ি ক্রসিং মোড়ে ক্যাম্পাস অভিমুখে ব্যারিয়ার বসানো হয়েছে। এতে বাইরের যানবাহন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারছে না।

তবে শাহবাগ ও হাইকোর্ট মোড়ে প্রবেশের লেন বন্ধ থাকায় বের হওয়ার লেন দিয়ে দুই দিকে যান চলাচল অব্যাহত রয়েছে। এতে এই দুই পথে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী শাহবাগ, কাঁটাবন মোড়, সায়েন্সল্যাব, পলাশী মোড়, নীলক্ষেত মোড়, হাইকোর্ট মোড়সহ একাধিক স্থানে তীব্র যানজট দেখা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানায়, এখন থেকে প্রতিদিন যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে ব্যারিয়ারগুলো বিকেল থেকে সচল থাকবে। তবে যানজটের চাপ কমাতে হাইকোর্টে মোড়ের ব্যারিয়ার তুলে দোয়েল চত্বরে যানবাহন আটকানো হবে। যেন যানগুলো শহীদ মিনার হয়ে পলাশী দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে।

এদিকে বহিরাগত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে যান-চলাচল ও বহিরাগত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অনেকের সঙ্গে একাধিকবার আন্দোলন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী খালিদ হাসান।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রশাসনের কাছে আমাদের পাঁচটি দাবি ছিল। তারা কয়েকটি দাবি পূরণ করেছে। রাজু ভাস্কর্যের পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেটটি বন্ধ করেছে। এখন প্রবেশপথগুলোতে ব্যারিয়ার দিয়েছে। তবে একপাশে ব্যারিয়ার দিলেও অন্যপাশে এখনো খোলা রয়েছে। ফলে সেই পাশে যানজট থাকছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছিলাম, সিটি করপোরেশন থেকে জায়গাগুলো যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়া হয়। প্রশাসন তা এখনো পারেনি। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ও বহিরাগত নিয়ন্ত্রণের কথা আমরা বলেছি। প্রশাসন জানুয়ারি মাসের মধ্যে এসব বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে। ১ জানুয়ারির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে ক্যান্টনমেন্ট ধরনের একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উপহার দেবে বলে তারা জানিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তাহমিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যান চলাচল কমানোর দাবি বহুদিন ধরেই তোলা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সার্ভিলেন্স বক্স লাগানো হলেও কোনো লাভ হয়নি। আজ প্রথম বাস্তবিক অর্থে পদক্ষেপ দেখে সব শিক্ষার্থীই খুশি। ঢাকার অন্য রাস্তাগুলোয় তীব্র যানজটের কথা শোনা যাচ্ছে। সেসব বিষয়ে সিটি করপোরেশনের বিকল্প ব্যবস্থা চিন্তা করা উচিত।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, অতিরিক্ত যান চলাচল এবং বহিরাগতদের অবাধ বিচরণের ফলে বিশেষ করে ছুটির দিনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ প্রায় অচল হয়ে যেত। ফলে যান নিয়ন্ত্রণ করা শিক্ষার্থীদের কাছে স্বস্তির।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, বিকেল থেকে ব্যারিয়ার সচল থাকবে। তবে হাইকোর্টের ব্যারিয়ারটি সরিয়ে এনে দোয়েল চত্বরে দেওয়া হবে, যেন যানগুলো হাইকোর্ট দিয়ে প্রবেশ করে শহীদ মিনার ও পলাশী হয়ে বেরিয়ে যেতে পারে। তাহলে একটু  চাপ কম পড়বে।

অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানের বিষয়ে তিনি বলেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলো সাধারণত অগ্রাধিকার পায়। তবে শুক্রবার বলে হয়তো যানজট হচ্ছে। হয়তো অনেকে জানতেন না। সে কারণেও ভিড় হয়েছে। আশা করি, কাল থেকে সমস্যা কম হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
এফএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।