ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সৈয়দপুরে আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের অন্যতম হোতা আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
সৈয়দপুরে আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের অন্যতম হোতা আটক

নীলফামারী: আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে মো. জাভেদ আক্তার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি)।  

শনিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে সৈয়দপুর শহরের ইসলামবাগ শেরু হোটেল এলাকায় তার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

 

সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দীন। গ্রেপ্তারকৃত জাভেদ আক্তার শহরের নতুন বাবুপাড়ার বাসিন্দা।

ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জাভেদ নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। এছাড়া থানায় বিভিন্ন মামলার তদবির করতেন। এসবের আড়ালে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছিলেন স্বর্ণ চোরাচালান। একই উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ এলাকার জিয়াউল ইসলাম (৫৮) নামে একজন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পথে গত ১৬ আগস্ট ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পুলিশের হাতে আটক হন। তল্লাশিকালে তার ব্যাগ থেকে অবৈধভাবে নিয়ে আসা ১২টি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। যার ওজন পাঁচ কেজি ৯৮০ গ্রাম। ওই স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় ছয় কোটি টাকা। জিয়াউলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। গত ২৭ নভেম্বর জিয়াউলকে রিমান্ডে নিলে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাতে বেরিয়ে আসে স্বর্ণ চোরাচালানের অন্যতম মূলহোতা জাভেদের নাম।  

স্বীকারোক্তিতে তিনি জানান, স্বর্ণ চোরাচালানের অন্যতম মূলহোতা সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়ার বাসিন্দা মো. জামিল আক্তারের ছেলে মো. জাভেদ আক্তার। সৈয়দপুর থানা পুলিশ তাকে সাংবাদিক হিসেবে চেনে। পাসপোর্টে নতুন বাবুপাড়ার বাসিন্দা হলেও তিনি শহরের ইসলামবাগ শেরু হোটেল এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন। জিয়াউল ইসলামের স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে গত শনিবার রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে জাভেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঢাকায় আটক জিয়াউল হকের ছেলে মো. জাহিদ বলেন, আমার বাবার মেরুদণ্ডের হাড়ের সমস্যা ছিল। জাভেদ আক্তার আমার বাবাকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার প্রলোভন দিয়ে পাসপোর্ট ও ভিসা তৈরি করে দেন। আমাদের না জানিয়েই আমার বাবাকে তিনি সিঙ্গাপুরে পাঠান। পাসপোর্টে আমার বাবার ফোন নম্বরের পরিবর্তে কৌশলে জাভেদ আক্তারের ফোন নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। যা আমি বিমানবন্দর থানায় গেলে জানতে পারি।  

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা একজন সহজ-সরল মানুষ। তিনি বৃদ্ধ ও অসুস্থ। জাভেদ আক্তার আমার বাবাকে ফাঁসিয়েছেন।

শহরের ইসলামবাগ শেরু হোটেল এলাকার মতিয়ার রহমান নামে একজন জানান, জাভেদ আক্তারের নির্দিষ্ট কোনো পেশা ছিল না। কখনো তিনি স্ক্রিন প্রিন্টের মালামাল ব্যবসায়ী, কখনো বা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিতেন। কিছুদিন আগে তার মা হাসিনা খাতুন, স্ত্রী আরজু ও শাশুড়ি শামিমা খাতুন সিঙ্গাপুর বেড়াতে গিয়েছিলেন। জাভেদ আক্তার হয়ত তাদের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর থেকে অবৈধভাবে স্বর্ণ আনিয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজহারুল ইসলাম জানান, আটক জিয়াউল হকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গত শনিবার রাতে জাবেদকে সৈয়দপুর শহরের ইসলামবাগ সেরু হোটেল এলাকা থেকে আটক করা হয়। তদন্তের স্বার্থে আদালতের মাধ্যমে তার রিমান্ড চাওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।