ময়মনসিংহ: বিগত ১৫ বছরে মতাদর্শ বিবেচনা করে সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হত বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
তিনি বলেন, আওয়ামী বা ফ্যাসিবাদ সমর্থক না হওয়ার কারণে আবেদন করে মৃত্যুবরণ করার পরও অনেক সাংবাদিককে অনুদান দেওয়া হয়নি।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের আর্থিক সুবিধা ও কল্যাণে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, বার্ধক্যজনিত কারণে অসহায় পেশাদার সাংবাদিকদের মাসিক ভাতা দেওয়ার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে এই কার্যক্রম শুরু হবে। সেই সঙ্গে সাংবাদিকদের মেধাবী সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য বৃত্তি দেওয়ার ব্যাপারে প্রথমবারের মতো ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে মেধাবী সন্তানদের জন্য মাস্টার্স পর্যন্ত এই বৃত্তি সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
তবে বোর্ডের বিধিবিধানের কারণে চাইলেই তাৎক্ষণিক কোনো সাংবাদিককে আর্থিক সহযোগিতা করার সুযোগ হয় না জানিয়ে মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, সাংবাদিকদের সাশ্রয়ী চিকিৎসার বিষয়েও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
সেই সঙ্গে সাংবাদিকদের ডাটা বেইজ তৈরি করে জীবনবীমাসহ কল্যাণমূলক নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও জানান সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট্রের এমডি মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
এ সময় সাংবাদিকদের উত্থাপিত পেশাগত নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে এই সাংবাদিক নেতা আরও বলেন, ইতোমধ্যে গণমাধ্যম সংস্কারে মিডিয়া কমিশন গঠিত হয়েছে। আপনারা আপনাদের সমস্যা তুলে ধরে মিডিয়া কমিশনে প্রস্তাব দিন। আশা করছি আপনাদের যৌক্তিক প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন হবে।
মতবিনিময় সভা শেষে ময়মনসিংহ বিভাগের ২০ জন অসুস্থ, আহত এবং মৃত্যবরণ করা একটি সাংবাদিক পরিবারের মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে
আর্থিক অনুদানের প্রথম কিস্তির চেক বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে মৃত সাংবাদিক পরিবারকে দুই লাখ এবং অন্যান্যদের ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়।
এ সময় ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সদস্য শাহীন হাসনাত, সাংবাদিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহের সভাপতি আইয়ুব আলী ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. মুফিদুল আলম বলেন, সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। তথ্য প্রমাণ দিয়ে সহযোগিতা করুন। তবেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সত্যের সঙ্গে মিথ্যার মিশ্রণ করবেন না। বিবেক বিসর্জন দেবেন না। মনে রাখবেন জীবনের পরও আরও জীবন আছে। সেখানে জবাবদিহিতা করতে হবে।
এ সময় ময়মনসিংহে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২৪
আরএ