ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ৩ কর্মকর্তার নামে দুদকের মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ৩ কর্মকর্তার নামে দুদকের মামলা

রাজশাহী: টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক তিন কর্মকর্তার নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  

আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পৃথকভাবে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন- মহেরাব হোসেন রিপন (৩৫), মো. জুলহাস (৪০) ও কে এম মাসুদ রানা (৪৬)। তিনজনই গ্রামীণ ব্যাংকের রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া শাখায় কর্মরত ছিলেন। তাদের মধ্যে রিপন ও জুলহাস ছিলেন জ্যেষ্ঠ কেন্দ্র ব্যবস্থাপক।

এছাড়া অভিযুক্ত মাসুদ রানা ছিলেন শাখা ব্যবস্থাপক (প্রিন্সিপাল অফিসার)। বর্তমানে তিনজনই বরখাস্ত অবস্থায় রয়েছেন।

রিপনের বাড়ি পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার বিশিপাড়া গ্রামে। জুলহাসের বাড়ি রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলার নামুদরখালী গ্রামে।

মাসুদ রানা পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বিলবকরী গ্রামের বাসিন্দা। একটি মামলায় শুধু রিপনকে আসামি করা হয়েছে। অপর মামলায় মাসুদ রানা ও জুলহাসও আসামি।

দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানিয়েছেন, তিনি এই দুটি মামলারই বাদী।

আমির হোসাইন  জানান, আসামি জুলহাস এককভাবে ১১ লাখ ৬৮ হাজার ২৯৭ টাকা এবং অপর আসামি মাসুদ রানার সহায়তায় পরস্পর যোগসাজশে ৮২ হাজার ২৬৪ টাকাসহ মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার ৫৬১ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অনুসন্ধান ও তদন্তের পর সাবেক এই তিন ব্যাংক কর্মকর্তার অপরাধের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হওয়ায় মামলা দুটি করা হয়েছে।

রিপনের নামে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ১৭ আগস্ট তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের চাকরি শুরু করেন। ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত নিমপাড়া শাখায় কর্মরত ছিলেন। তিনি সাতজন সদস্যের পাস বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে এককালীন ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৭ টাকা; একজন সদস্যের পাস বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সবুজ জিপিএস হিসাবের মাসিক কিস্তি বাবদ ১২ হাজার ১৬০ টাকা, তিনজন সদস্যের পাস বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের ৭১ হাজার টাকা আদায় করে কোনো টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া আরেকজন সদস্যের পাস বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সহজ বা বিশেষ বিনিয়োগ ঋণের কিস্তির ৭৫০ টাকা কম জমা দিয়ে চারটি খাতে ১২ জন সদস্যের ২ লাখ ১৮ হাজার ৫৯৭ টাকা আত্মসাৎ করেন।

আর মাসুদ রানা ও জুলহাসের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি চাকরি শুরু করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি চারঘাটের নিমপাড়া শাখায় কর্মরত ছিলেন। তিনি ২৫ জন সদস্যের পাশ বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে ঋণের এককালীন ১০ লাখ ২৭ হাজার ৫৪৩ টাকা; ১৩ জন সদস্যের পাস বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সবুজ জিপিএস হিসাবের মাসিক কিস্তি বাবদ ৪৩ হাজার ৮৮৬ টাকা; পাঁচজন সদস্যের পাস বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের ৯০ হাজার ৪০০ টাকা আদায় করে ব্যাংকে জমা করেননি।  

এছাড়া অপর সদস্যের পাস বইয়ে এন্ট্রি দিয়ে সহজ বা বিশেষ বিনিয়োগ ঋণের কিস্তির ৬ হাজার ৪৬৮ টাকা কম জমা দিয়ে মোট চারটি খাতে ৪৪ জন সদস্যের ১১ লাখ ৬৮ হাজার ২৯৭ টাকা আত্মসাৎ করেন। এছাড়া মাসুদ রানা ২০০৫ সালের ৩১ জুলাই চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট থেকে ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিমপাড়া শাখায় ছিলেন।

জুলহাস তার সহযোগিতায় তিনজন সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে ঋণপ্রস্তাব তৈরি করে এরিয়া অফিস থেকে অনুমোদন নেন। তারপর ঋণ বিতরণ না করে ৮২ হাজার ২৬৪ টাকা আত্মসাৎ করেন। অনুসন্ধানে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আজ সুনির্দিষ্ট অভিযোগে পৃথকভাবে মামলা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
এসএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।