ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বগুড়ায় দুর্গোৎসব উপলক্ষে জমে উঠেছে খেলনার দোকান

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৪
বগুড়ায় দুর্গোৎসব উপলক্ষে জমে উঠেছে খেলনার দোকান

বগুড়া: শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে বগুড়ায় বিভিন্ন পূজামণ্ডপের আশপাশের এলাকায় রকমারি খেলনার দোকান বসেছে। দুর্গোৎসবের এসময়ে জমে উঠেছে দোকানিদের বেচাবিক্রি।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে সদর উপজেলার মালতীনগর, চেলোপাড়া, নামাজগড়সহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে ভক্ত সাধারণ ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে আসা শিশুদের রকমারি খেলনা কেনার দৃশ্য চোখে পড়ে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পূজামণ্ডপ এলাকায় নির্দিষ্ট স্থানে মাদুরের ওপর মাটির তৈরি রকমারি পণ্যের পসরা বসিয়েছে দোকানিরা। প্রত্যেকটি দোকানে খেলনাগুলো সাজানো-গোছানোভাবে রাখা রয়েছে। খেলনাগুলোর মধ্যে রয়েছে হাঁস, মোরগ, পুতুল, বাঘ, হরিণ, মাছ, আম, টিয়া, তরমুজ, হাতি, গরু, বিড়াল, হাঁড়ি-পাতিল, ফুলদানি, মাটির ব্যাংক ও বিভিন্ন ধরনের খেলনা সামগ্রী। শিশুরা তাদের মা-বাবার সঙ্গে পূজামণ্ডপ ঘুরে ছুটছেন এসব দোকানগুলোতে।

শহরের মালতিনগর পূজামণ্ডপের পাশে খেলনা সামগ্রীর দোকান নিয়ে বসেছে বীনয় পাল। হরেক রকমের খেলনার পসরা সাজানো তার দোকানে। বড় আকৃতির সঙ্গিন তাল সজ্জিত করে রাখা হয়েছে। পাশেই শোভা পাচ্ছিল আম, আপেল-কমলা-কামরাঙা ছড়াচ্ছিল বাহারি রঙের আতা।

মেলায় খেলনা দোকানি বীনয় পাল, মনসুর আলী বাংলানিউজকে জানান, প্রতি বছর পূজার সময় তারা মেলায় বিভিন্ন খেলনা বিক্রি করে থাকেন। পূজা কমিটির নির্দেশ মেনে তারা নির্দিষ্ট স্থানে দোকান বসিয়েছেন। মাটির তৈরি সামগ্রীগুলো পূজার মেলাতে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। এখন মেলাতে বেচাকেনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মাটির তৈরি খেলনা সামগ্রী ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের পুতুল, প্লাস্টিকের ফুলের সামগ্রী, পিস্তল, নানা মডেলের গাড়ি, হারমোনিয়াম, গিটার, কুকুর, বিড়াল ছানাসহ হরেক আইটেমের খেলনা রয়েছে তাদের কাছে। পূজার শেষ দিন মেলাতে বেচাকেনা বৃদ্ধি পায় বলে মন্তব্য করেন তারা।

দোকানি হান্নান মণ্ডল জানান, তিনি ও তার ভাই হোসেন মণ্ডল বিভিন্ন খেলনা বেচাবিক্রি করেন। শাজাহানপুর উপজেলার নোয়াগড় থেকে শহরের নামজগড় এলাকায় পূজার মেলায় এসেছেন তারা। বিভিন্ন মেলায় ও পূজাতে মাটির বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করেন। এরমধ্যে মাটির ছোট হাড়ি, কলস, বিভিন্ন খেলনা, হাতি ঘোড়া রয়েছে। ছোট বাচ্চাদের জন্যই আমাদের এসব জিনিস। কেউ শখের বসে বা ছোটদের উপহার দেওয়ার জন্য এসব কিনে থাকে। পূজার মেলায় ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা আয় হয়ে থাকে। এবার কী হবে বলা যাচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, বাপ-দাদারাও খেলনা তৈরি করতেন। এখন তারা দুই ভাই তৈরি করছেন। অন্য সময় তেমন একটা বিক্রি হয় না। তাই যেখানেই মেলা বসে সেখানেই তারা চলে যান। এভাবেই চলছে তাদের সংসার।

ক্রেতা সর্মিলা রানী, ধীরেন্দ্রনাথ, রফিকুল ভুঁইয়া বাংলানিউজকে জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রতিবছর পূজামণ্ডপগুলোতে হরেক রকম খেলনার মেলা বসে। শিশু, কিশোর-কিশোরী মাটির তৈরি পণ্য বেশি পছন্দ করে। তাদের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা সাজানো হয় এবং হরেক রকম খেলনা সামগ্রীর আমদানি ঘটায় দোকানিরা। শিশুদের পাশাপাশি বড় শ্রেণির ক্রেতারা সাধারণ বাসাবাড়িতে সাজিয়ে রাখার জন্য মাটির তৈরি সামগ্রী কিনে থাকেন। নারী ক্রেতার মাটির তৈরি ব্যাংক, বিভিন্ন শো-পিচ বেশি কেনেন বলে মন্তব্য করেন তারা।

শারদীয় দুর্গোৎসবের সময়ে তাদের বেচাবিক্রি অনেকটা বেড়ে গেছে। সকাল থেকেই পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে ভক্ত ও দর্শনার্থীরা তাদের সঙ্গে আসা শিশুদের নিয়ে এসব খেলনা সামগ্রী কিনতে দোকানে দোকানে ভিড় করছেন। বিভিন্ন সামগ্রী পছন্দ করছেন দরদাম মিটিয়ে কিনে ফেলছেন।

বগুড়ায় এ বছর মোট ১২টি উপজেলায় ৬৩৪টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন পূজা মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছেন। পূজা মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনীও কাজ করছেন। এর পাশাপাশি নিজ দায়িত্বে প্রতিটি মন্দিরে কমিটির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবী নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৪
কেইউএ/এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।