ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বরখাস্ত এসপির নামে স্ত্রী-সন্তানদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
বরখাস্ত এসপির নামে স্ত্রী-সন্তানদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ

নাটোর: নাটোরে বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে স্ত্রী কন্যাদের ওপরে অন্যায় অত্যাচার, নির্যাতন ভরণপোষণ না দেওয়াসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী মেহনাজ আকতার আমিন। একই সঙ্গে সেনা কর্মকর্তাদের সম্পর্কে শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য দেওয়াসহ নানা কারণে দু’দফা সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসপি স্বামীর শাস্তির দাবি করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে জেলা শহরের স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় তার দুই সন্তান ফাতিহা তাসনীম হক ও রাদিয়া ফিদান হকসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেহনাজ আকতার আমিন অভিযোগ করেন, ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর নাটোর সদরের জংলী গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে বর্তমানে পুলিশের বরখাস্তকৃত এসপি এসএম ফজলুল হকের সঙ্গে তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১৫ ও ৮ বছর বয়সী দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০২১ সালে র‌্যাবে এসপি হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় সেনাবাহিনী সর্ম্পকে কুরুচিপূর্ণ কথা বলার ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার জের ধরে ফজলুল হককে সরকার শাস্তি দেয়।

একই বছর তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্তও করে সরকার। এ সময় তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। বাধা দিলে তিনি স্ত্রী সন্তানদের মারধর শুরু করেন। ২০২৩ সালে ফজলুল হক পুনরায় ঠাকুরগাঁয়ে ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে এসপি হিসেবে যোগ দিয়ে সেখানকার জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে আবারও পরকীয়া সর্ম্পক গড়ে তোলেন। একটি ভাড়া বাসায় সেই নারীর সঙ্গে অবস্থান করার সময় স্ত্রী সন্তানরা কৌশলে সেখানে উপস্থিত হলে ফজলুল হক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রচণ্ড শীতের মধ্যে মধ্যরাতে স্ত্রী সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।

এমন নানা অনিয়ম ও অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় চলতি বছরের ১৩ মার্চ বিগত সরকার তাকে আবারও বরখাস্ত করে। এ ঘটনার পর ফজলুল হক রাজশাহীর বাসায় এসে স্ত্রী সন্তানদের জোর করে অভিযোগ নেই মর্মে লিখিত অঙ্গীকারনামা নেন। তার ভয়ে স্ত্রী সন্তানরা পুলিশ সদর দপ্তরে তদন্ত কমিটির সামনেও হাজির হতে পারেননি। ইতোমধ্যে ফজলুল হক জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের কর্মরত সেই নারী কর্মকর্তার সঙ্গে বিয়ে করে নাটোর শহরের মোহনপুরে বাসা নিয়ে বসবাস শুরু করেছেন।  

এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় গত ছয়মাস থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের কোনো খরচ বহন না করে উল্টো স্ত্রী ও তার বাবা-মা ও ভাইদের নামে দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। এ বিষয়ে ফজলুল হকের স্ত্রী ও সন্তানরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশ প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করে উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরখাস্তকৃত পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম ফজলুল হক বাংলানিউজকে বলেন, তার প্রথম স্ত্রীর অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি কখনোই কারও সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন না। প্রথম স্ত্রী মেহনাজ আকতার আমিন নিজেই পরকীয়ায় লিপ্ত অভিযোগ করে তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে প্রথম স্ত্রী নানাভাবে তাকে সমাজে অসম্মানিত করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।