ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জরিপের তথ্য

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ২ বছর চায় ৫৩ শতাংশ ভোটার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০২৪
অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ২ বছর চায় ৫৩ শতাংশ ভোটার সেমিনারে অধ্যাপক ড. আকরাম হোসেনসহ অন্যরা।

ঢাকা: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) পরিচালিত একটি গবেষণায় উঠে এসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দুই বছর বা তার কম হওয়া উচিত বলে মনে করেন ৫৩ শতাংশ ভোটার।  

বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জাতীয় জরিপ ২০২৪- বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নাগরিকদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে এসআইপিজি।

জরিপের তথ্য ও ফলাফল উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. আকরাম হোসেন।  

তিনি জানান, ৯ সেপ্টেম্বর-১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ দেশের আটটি বিভাগের ১৭টি জেলায় মোট ১ হাজার ৮৬৯ জনের ওপর এই জরিপ করা হয়। এটি জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সর্বপ্রথম সরাসরি পরিচালিত একটি জাতীয় প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ। উত্তরদাতাদের বৃহত্তম অংশ (৬৩%) মধ্যবয়সী (২৮-৫০ বছর), ২২ শতাংশ জেনারেশন জেড (১৮-২৭ বছর), এবং ১৪ শতাংশের বয়স ৫০ বছরের ওপরে। এছাড়া জরিপের উত্তরদাতাদের ৫৪ শতাংশ শহরাঞ্চল ও ৪৬ শতাংশ গ্রামীণ অঞ্চলের।

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ সম্পর্কে মতামত:

উত্তরদাতাদের প্রায় ৫৩ শতাংশ মনে করেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দুই বছর বা তার কম হওয়া উচিত, যেখানে ৪৭ শতাংশ মনে করেন যে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে তিন বছর বা তার বেশি ক্ষমতায় থাকতে হবে।

সমীক্ষা আরও প্রকাশ করেছে:

রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা: উত্তরদাতাদের ৪৬ শতাংশ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে অনিশ্চিত, যেখানে ৫৪ শতাংশ মূলধারার রাজনীতিতে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

রাজনৈতিক সংস্কার:

উত্তরদাতাদের ৯৬ শতাংশ প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিত করাকে সমর্থন করে, এবং ৪৬ শতাংশ বিশ্বাস করে যে উল্লেখযোগ্য সাংবিধানিক পরিবর্তন প্রয়োজন। উপরন্তু, ১৬ শতাংশ সম্পূর্ণ নতুন সংবিধানের পক্ষে তাদের মত জানিয়েছেন।

গবেষণায় আরও জানা যায়, নাগরিকরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে তাদের বন্যা ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশ পুলিশ, শিক্ষা ব্যবস্থা, রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কারের উপরও নাগরিকদের আকাঙক্ষা প্রকাশ পেয়েছে।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সচিব ড. বদিউল আলম মজুমদার।  

তিনি বলেন, আমি মনে করি এই গবেষণাটা সঠিকভাবেই করা হয়েছে। এবং এই জরিপে যে বিষয়টি উঠে এসেছে এটা বোধহয় আমাদের সবারই জানা। আমরা নিজেরা যে বিষয়টি উপলব্ধি করি, অন্যের কাছ থেকে শুনি এই গবেষণায় যেটা এসছে সেটা তার সাথে সংগতিপূর্ণ।  

তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন আগেও হয়েছে, কিন্তু আমরা তার সুফল পাইনি। এর কারণ হলো পলিটিক্যাল কালচার। আমাদের রাজনীতিবিদরা যে অঙ্গীকার করেন, জনগণ যেটা চায় সে ব্যাপারে ক্ষমতায় যাওয়ার পরে যদি আন্তরিকতার সাথে  তারা সেটা বাস্তবায়ন না করেন, তাহলে তার সুফল কখনোই পাওয়া যাবে না। সুফল যদি পেতে হয় তাহলে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে, আমাদের রাজনৈতিক দলের পরিবর্তন করতে হবে। আমরা যদি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চাই তাহলে আমাদের মন মানসিকতা গণতান্ত্রিক হতে হবে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতান্ত্রিক হতে হবে।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন এসআইপিজির উপদেষ্টা অধ্যাপক সালাহউদ্দিন এম. আমিনুজ্জামান, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাভিন মুর্শিদ প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০২৪
ইএসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।