ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অগ্নিসংযোগ-লুটপাটে ফেনী পৌরসভায় ক্ষতি সাড়ে ৫ কোটি টাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২৪
অগ্নিসংযোগ-লুটপাটে ফেনী পৌরসভায় ক্ষতি সাড়ে ৫ কোটি টাকা

ফেনী: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের খবরে ফেনী পৌরসভায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫০ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

২৫টি খাতের ক্ষতি মূল্যায়ন করে এ আনুমানিক আর্থিক পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আবুজর গিফরী।

ক্ষয়ক্ষতির তালিকায় দেখা গেছে, যান্ত্রিক শাখায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা, মেডিকেল অফিসারের কক্ষে ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ৬০০ টাকা, সাধারণ শাখায় ৫১ লাখ ৩ হাজার টাকা, হিসাব বিভাগের মালামালের ক্ষতি হয়েছে ৯ লাখ ৮৯ হাজার টাকা, কর নিরূপণ শাখার ৩ লাখ ১২ হাজার ৮৩০ টাকা, কর আদায় শাখার ১৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ট্রেড লাইসেন্স শাখার ৬ লাখ ৯৮ হাজার ১০০ টাকা, স্বাস্থ্য শাখায় ২ লাখ ৯১ হাজার টাকা, কনজারভেন্সি শাখার ২৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কক্ষের ৭ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ টাকা, উপ সহকারী প্রকৌশলী সিভিল-১ কক্ষের ২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা, উপ সহকারী প্রকৌশলী সিভিল-২ কক্ষের ৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, উচ্চমান সহকারীর কক্ষের ২ লাখ ৮ হাজার টাকা, উপ সহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ এর ৪ লাখ ৩ হাজার টাকা, উপ সহকারী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ এর কক্ষের ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ টাকার ইলেকট্রিক মালামাল, ব্লাড ব্যাংকের ৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা, মশক নিধন কক্ষে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৯০০ টাকা, মসজিদের মালামাল ২ লাখ ২২ হাজার ৬২০ টাকা, রিকশা স্টোরের মালামাল ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা, পানি শাখার মালামাল ৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা, পেট্রোবাংলার পানি শাখার ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আগুনে পৌর ভবনের আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা।

পৌরসভা সংস্কারের ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগ ফেনীর উপপরিচালক গোলাম মোহাম্মদ বাতেন বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে ক্ষতি নিরূপণের তালিকা করা হয়েছে। এটি সংস্কারে পৌরসভার রাজস্ব তহবিল থেকে কিছু ব্যয় হতে পারে। এক্ষেত্রে পৌর পরিষদকে এটি করতে হবে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে।

ফেনী পৌরসভায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটে বিএনপি কিংবা জামায়াতের লোক জড়িত নয় বলে দাবি করছেন দল দুটির নেতারা। গত রোববার (১১ আগস্ট) ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী পৌরসভা পরিদর্শন করেন জেলা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এ সময় পৌরসভার অবস্থা দেখে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সংস্কার করে সেবা কার্যক্রম চালুর আশ্বাস দেন বিএনপি নেতারা।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার বলেন, বিএনপির কোনো নেতাকর্মী এ সব অপকর্মে জড়িত নয়। যারা এ সব কাজে জড়িত ছিল, তাদের কাউকে আমরা চিনি না। টোকাই শ্রেণির কিছু লোক ফেনী পৌরসভা, ফেনী মডেল থানাসহ সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন বলেন, আমরা জ্বালাও-পোড়াও বা লুটপাটের রাজনীতি করি না। ছাত্রদল শান্তিপূর্ণ সংগঠন। পৌরসভার লুটপাট হওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারে যুবদল-ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ভূমিকা রাখছে।

জেলা জামায়াতের আমির এ কে এম শামসুদ্দিন বলেন, স্বৈরাচার সরকার দেশ থেকে চলে গেলেও তাদের প্রেতাত্মারা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। কেউ যেন আর রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকতে হবে। আমরা এতে ব্যর্থ হলে এতজন শিক্ষার্থীর জীবন বৃথা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২৪
এসএইচডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।