ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গোলাপগঞ্জে মসজিদের মাইকে ডেকে সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ২

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২৪
গোলাপগঞ্জে মসজিদের মাইকে ডেকে সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ২

সিলেট: সিলেটের গোলাপগঞ্জে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার ধারাবহরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন-উপজেলার ধারাবহর গ্রামের মো. মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩) ও উপজেলার শিলঘাটের বাসিন্দা সানি আহমদ (১৮)।

গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও চিকিৎসক শাহিন আহমদ নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, দুপুরে গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ ডিগ্রি কলেজের সামনে থেকে ছাত্র-জনতা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় তাদের সরিয়ে দিতে চায় পুলিশ। সেখানে বিজিবিও উপস্থিত ছিল।  

একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে ছাত্র-জনতার তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। বিভিন্ন মসজিদে ঘোষণা দিয়ে এ সময় এলাকাবাসীও সংঘর্ষে জড়ান।

প্রায় দুই ঘণ্টা সংঘর্ষে ছাত্র-জনতা ও এলাকাবাসী পুলিশ-বিজিবির দিকে ইট-পাটকেল ছোড়ে। পুলিশ-বিজিবি গুলি, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি পিছু হটতে বাধ্য হয়।

এক পর্যায়ে সংঘর্ষ গোলাপগঞ্জ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বেলা ২টার দিকে পৌর এলাকার ধারাবহরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে কিছু মানুষ জড়ো হলে সেখানে পুলিশ ও বিজিবি উপস্থিত হলে উত্তেজনা দেখা দেয়।  

এ সময় গুলিতে তাজ উদ্দিন ও সানি আহমদ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, তাজ উদ্দিনের লাশ নিয়ে পৌরশহরে এসে ধারাবহর এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। বিকেল ৪টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গোলাপগঞ্জ পৌরশহর ও ঢাকাদক্ষিণ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এর আগে, বেলা ১১টার দিকে কোর্ট পয়েন্টে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ মিছিল বের করে। এ ছাড়া জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টা পয়েন্টে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে অনেকে হতাহত হন। তবে আহতদের সংখ্যা ঠিক কতজন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সরকার পতনের একদফা দাবিতে রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি পালনে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সড়কে নামেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।  

দুপুরে নগরের কোর্ট পয়েন্টে পুলিশ-আন্দোলনকারী পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে মহানগরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। আন্দোলনকারীদের ইটপাটকেলের জবাবে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।

দুপুর ১টা থেকে জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, বারুতখানা, জেলরোড, হাওয়াপাড়া, মিরবক্সটুলা, নয়াসড়ক ও আম্বরখানাসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেন। সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে তারা যান চলাচল বন্ধ করে দেন।  

নগরের প্রতিটি পয়েন্টে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের মোকাবিলা করতে সশস্ত্র অবস্থানে রয়েছেন। এমনটি দেখা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২৪
এনইউ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।