ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুব শিগগিরই দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে: সেনাপ্রধান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২৪
খুব শিগগিরই দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে: সেনাপ্রধান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

ঢাকা: সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, দেশে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে যে অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে, এতে দেশের জনগণের (রাষ্ট্রীয়) অনেক সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। সেগুলোকে রক্ষা করা ও নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সেনাবাহিনী নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরত এসেছে বলে আমি মনে করি।

তবে আমরা সবাই মিলে যদি কাজ করি, আশা করি খুব শিগগিরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।  

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েনকৃত সেনা সদস্যদের কার্যক্রম ও যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনায় পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।  

সোমবার (২২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মাওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের সামনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।  

সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, শুধু সেনাবাহিনী নয়, আমাদের সঙ্গে বিমানবাহিনী, নৌবাহিনীও ছিল।

পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও আনসার বাহিনীসহ আমরা সবাই মিলে একটা সুন্দর স্বাভাবিক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।  

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কত সময় লাগবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে সেনাপ্রধান বলেন, কিছু সময় দিতে হবে। সেনাবাহিনী মাত্র ৪৮ ঘণ্টা হয়েছে এসেছে।

আমরা সবাই মিলে কাজ করলে আশা করি খুবই দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এ জন্য সবার সহযোগিতা কাম্য।

সেনাপ্রধান বলেন, এই পরিস্থিতিতে মিডিয়াকর্মীরা অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করে আইন-শঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীকে সহযোগিতা করেছেন। আশা করি এভাবে আরও দায়িত্ব পালন করবেন। তাই আহ্বান করবে, জনগণ মিডিয়া, আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাবাহিনী আমরা সবাই মিলে দেশটাকে আবার স্বাভাবিক জায়গায় নিয়ে যেতে চাই।

সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। আমরা যদি সবাই একসঙ্গে কাজ করি তাহলে নিশ্চিত অতিদ্রুতই স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে যেতে পারব।  

রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় এবং রাস্তায় জনগণের যে পরিমাণ সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে তা অবর্ণনাতীত। এই সম্পদ কারও ব্যক্তিগত সম্পদ না, এগুলো জনগণের (রাষ্ট্রীয়) সম্পদ। সশস্ত্রবাহিনীসহ আমাদের সবার দায়িত্ব জনগণের সম্পদ রক্ষা করা।  

তিনি আরও বলেন, জনগণের স্বার্থে এবং রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী কাজ করছে।  

যারা নাশকতা চালিয়ে রাষ্ট্রের বহুস্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে তাদের জন্য কী বার্তা আছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সেনাপ্রধান বলেন, জনগণের এই যে সম্পদ সেটা ধ্বংস করে তাদের কী লাভ সেটা আমার জানা নেই। এই যে রাষ্ট্রের এত সম্পদ এগুলো ক্ষতি হওয়াতে কারা ভোগান্তিতে? আমরা জনগণ সবাই ভোগান্তিতে আছি। ইন্টারনেট নেই, এটা স্বাভাবিক হতে কিছু সময় লাগবে। ইলেক্ট্রিসিটি, ওয়াটার, সুয়ারেজ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সব কিছু বিপর্যস্ত হয়েছে। এতে করে জনজীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে।  

যাত্রাবাড়ী এলাকায় নাশকতাকারীরা যে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালিয়েছে এতে করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাপ্লাই চেইনের কী অবস্থা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সাপ্লাই চেইন শুরু হয়েছে। আপনারা জানেন, যে পরিমাণ ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চলেছে, রাস্তায় আমি এখনও দেখলাম বেশ কিছু গাড়ি পোড়া অবস্থায় আছে। এগুলো পরিষ্কার করতে হবে। জনগণ এবং গাড়িচালকদের মধ্যে স্বস্তি নিয়ে আসতে হবে। তবে পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হতে কিছু সময় দিতে হবে। ইতোমধ্যে পরিস্থিতি অনেকটায় স্বাভাবিক হয়েছে।

দেশব্যাপী ক্রম অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে জনগণের জানমাল ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা দিতে গত ১৯ জুলাই রাত ১২টার পর থেকে দেশজুড়ে নিজ নিজ এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।