ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অচল ঢাকায় ভরসা মেট্রোরেল, ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২৪
অচল ঢাকায় ভরসা মেট্রোরেল, ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই

ঢাকা: বিকেল থেকে ঢাকার বিভিন্ন সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার একমাত্র ভরসায় পরিণত হয় মেট্রোরেল।

যে কারণে মেট্রোরেলে ছিল যাত্রীর ব্যাপক চাপ।

রোববার (৭ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মেট্রোরেলে জনজট অব্যাহত ছিল।

সরেজমিনে দেখা যায়, মতিঝিল থেকে প্রতিটি স্টেশনে বিপুল সংখ্যক মানুষ মেট্রোতে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করেন। বাসায় ফিরতে যে সংখ্যক মানুষ হাজির হন তার এক দশমাংশও মেট্রোরেল নিতে পারেনি। বেশিরভাগ যাত্রী স্টেশনেই দাঁড়িয়ে থাকেন পরের ট্রেনের আশায়। কিন্তু পরেরটাতেও একই অবস্থা।  প্রতি যাত্রায় মেট্রোরেলের কামরায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। এ সময় মতিঝিল অফিসপাড়া ও সচিবালয় থেকে ঘরমুখো মানুষকে বলতে শোনা যায়, মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে কোনোদিনই এমন অবস্থার তৈরি হয়নি।

সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই অবস্থা চলতেই থাকে।

কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ শুরু করলে মিরপুর, ফার্মগেট এবং গাবতলীমুখী যাত্রীরা গণপরিবহনে না চড়ে মেট্রোরেলের সুবিধা নিতে ভিড় জমান। এর ফলে মেট্রোরেলে তৈরি হয় তীব্র জনজট। আগের দিন কোটাবিরোধীরা কর্মসূচির ঘোষণা করলে সকাল থেকেই মানুষ গণপরিবহন এড়িয়ে মেট্রোরেল যাতায়াত শুরু করেন। নিয়মিত যাত্রীর পাশাপাশি এসব নতুন যাত্রী যোগ হওয়ার ফলে আজ সকাল থেকেই মেট্রোতে বেড়ে যায় যাত্রী।  অফিস ছুটি হওয়ার পরে যাত্রীর উপস্থিতি আরও বাড়ে।

পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী কাজ করে কাজীপাড়ায় বাসায় ফিরছিলেন আলম হোসেন। অন্য দিন মালামাল কিনে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা বাসে বাসায় ফেরেন তিনি। আজ মালামালের অর্ডার দিয়ে মহাজনের দোকানে রেখেই হেঁটে সচিবালয়ে মেট্রো স্টেশনে এসেছেন। প্রথমে দুইবার মেট্রোতে উঠতে ব্যর্থ হয়ে তৃতীয়বারে সফল হয়েছেন।  

আলম বললেন, ছাত্ররা অবরোধ করবে এজন্য মেট্রোরেলে এসেছি, আবার ফিরছিও। হরতাল-অবরোধ হলে বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নিরাপত্তা নেই। মেট্রোরেল সে ক্ষেত্রে  নিরাপদ ও গন্তব্য পৌঁছার নিশ্চয়তা রয়েছে।

তীব্র ভিড়ের মধ্যে যাত্রীকে ঠাসাঠাসি করে দাঁড়াতে হচ্ছে। তাই নিরাপদে দাঁড়াতে কেউ যেন অন্যের পথ রোধ না করে দাঁড়ান- এজন্য যাত্রীদের একে অপরের প্রতি সহনশীল হতে অনুরোধ করতে শোনা গেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে।  

মাইকে ভাসতে থাকে একটি কণ্ঠ - ‘চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন ও রথযাত্রার কারণে ঢাকার অধিকাংশ রাস্তায় অত্যধিক জ্যাম। এর প্রভাবে মেট্রোরেলেও অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপ। সম্মানিত প্যাসেঞ্জারবৃন্দ, অনুগ্রহপূর্বক সহযাত্রীর সাথে সৌহার্দপূর্ণ/সহনশীল আচরণ করুন। ট্রেনের দরজা ব্লক করে দাঁড়াবেন না অথবা কিছু রাখবেন না। ট্রেনে উঠতে প্লাটফর্মে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান। আপনার ভ্রমণ নিরাপদ হোক। ’

মেট্রোরেলের পক্ষ থেকে আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন যাত্রীরাও। যাত্রীর চাপ তৈরি হওয়ায় কারো সমস্যা হলেও ক্ষোভ ঝাড়তে দেখা যায়নি কাউকে। সবাইকে কষ্ট সহ্য করে যাতায়াত করতে দেখা যায়। পরিস্থিতি মানিয়ে নিয়েই গন্তব্যে ফিরেছেন যাত্রীরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২৪
জেডএ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।