ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গৃহবধূকে আটকে রাখার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৪
কিস্তির টাকা দিতে না পারায়  গৃহবধূকে আটকে রাখার অভিযোগ

মাদারীপুর: জেলার কালকিনিতে ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় এক  গৃহবধূকে ৮ ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে গণউন্নয়ন প্রচেষ্টা নামের এক এনজিওর বিরুদ্ধে। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় ওই নারীকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।

 

এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হলে ওই এনজিওর বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং অভিযুক্তদের বিচার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।  

সোমবার (১ জুলাই) সকালে উপজেলা প্রশাসন ও ভুক্তভোগী পরিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার রাত ১১টার দিকে কালকিনি উপজেলার গণউন্নয়ন প্রচেষ্টার অফিসে এ ঘটনা ঘটে।  

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের বাঘরিয়া গ্রামের অসহায় ওই গৃহবধূ গণউন্নয়ন প্রচেষ্টা নামে একটি এনজিওর কালকিনি শাখা থেকে সম্প্রতি ৮০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। গৃহবধূ ৩২ হাজার টাকার ঋণ পরিশোধও করেছেন। পরে গৃহবধূর স্বামী বিদেশ গিয়ে নিখোঁজ রয়েছেন।  

ফলে ওই ঋণের বাকী টাকা পরিশোধ করতে না পারায় রোববার বিকেল ৩টার দিকে গণউন্নয়ন প্রচেষ্টার কালকিনি শাখার ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে অফিস কর্মী সুবেন্দু বৈদ্য ও রুপালী বৈরাগী ওই গৃহবধূকে তাদের অফিস কার্যালয়ে নিয়ে এসে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় স্থানীয় লোকজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় রাত ১১টার দিকে গৃহবধূকে এনজিও অফিস থেকে নিয়ে আসেন।  

ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, আমার স্বামী নিখোঁজ থাকায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারি নাই। তাই ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন, অফিস কর্মী সুবেন্দু বৈদ্য ও রুপালী বৈরাগী আমাকে আমার স্বামী বাড়ি থেকে নিয়ে এসে তাদের অফিসে আটকে রাখেন। আমি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোনো রকম সংসার চালাই। আমি কী করে এ ঋণের টাকা পরিশোধ করবো জানি না।

তিনি আরও বলেন, আমার ছোট বাচ্চার বয়স মাত্র ৯ মাস। আমাকে যখন নিয়ে আসা হয় তখন আমার বাচ্চাটা অনেক কান্না করেছে। তবুও তারা আমাকে ছাড়েনি।

স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ সজিব বলেন, স্থানীয় লোকজন নিয়ে এবং ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় আটকে রাখা গৃহবধূকে আমরা উদ্ধার করি।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, দুগ্ধপোষ্য নারীকে বাচ্চা থেকে আলাদা করে রাখা অমানবিক। আইনগতভাবে এটা করতে পারে না। এনজিওটির বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

গণউন্নয়ন প্রচেষ্টার ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কিস্তির টাকা পাওনা থাকায় ওই গৃহবধূকে অফিসে আনা হয়েছিল।

কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ বলেন, ঋণের জন্য এক গৃহবধূকে আটকে রাখার বিষয়টি জেনেছি। পরে থানা পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।