ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘সিডরের রাইতেও ঘরে এতো পানি আয় নাই’

শফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৪ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৪
‘সিডরের রাইতেও ঘরে এতো পানি আয় নাই’

পাথরঘাটা (বরগুনা): ‘ওরে পানি, এতো পানি সিডরের রাইতেও আয় নাই।  এই পানি কবে যে নামবে জানি না’ কথাগুলো উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটা চরলাঠিমারা গ্রামের বাসিন্দা বেলায়েত হোসেনের।

তিনি বলেন, সিডর দেখছি, পানি আইছে আবার নাইম্যা গ্যাছে। কিন্তু এই বন্যায় পানি আইয়া সব তলাইয়া গ্যাছে। এহন মোগো অবস্থা খুবই খারাপ। একতে বাড়ি ঘর রাইখা সাইক্লোন শেল্টারে আছি, ওদিকে ঘর পানিতে তলাইয়া গ্যাছে।

পাথরঘাটার অধিকাংশ গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। পাথরঘাটার কাকচিড়া বাজার সংলগ্ন বিষখালী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। সেখানে পানির গতি এতটাই বেশি ছিল যাতে পুরো ইউনিয়নের দুই একটি গ্রাম বাদে বাকি সব গ্রাম ডুবে গেছে। এতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।

ইতোমধ্যেই বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন এবং পানিবন্দি থাকা মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

বরগুনার পাথরঘাটায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এতে প্রায় পাঁচ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার ৫৫০টি আংশিক ও  এক হাজার ৩৫০টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া মৌসুমে ফসল ও মাছের ঘেরের ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে অন্তত ৩০টি গ্রাম।

কাকচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু জানান, বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে, অনেক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান জানান, অনেক ঘর বাড়ি গাছপালা ভেঙে গেছে। অনেক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। উপজেলায় ১৫৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নিরাপদের তাদের বাড়িতে ফিরে গেছে।

বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাকিব বলেন, পাথরঘাটার কাকচিড়া, রুহিতা, জিনতলা, চরলাঠীমারা, কাঠালতলী, চরদুয়ানি পদ্মা এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিগগির এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা হবে।

পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন,  পাথরঘাটায় সাড়ে তিন হাজার পুকুর ও শতাধিক ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত তালিকা করা সম্ভব হয়নি। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।

বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা বলেন, পাথরঘাটায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীর কাছে জানানো হয়েছে। তিনি শিগগিরই পাথরঘাটা পরিদর্শনে আসবেন। এ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহায়তা করা হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০১ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০২৪
এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।