ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অভিযানের সময় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ জেলের লাশ মিলল ২২ ঘণ্টা পর

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
অভিযানের সময় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ জেলের লাশ মিলল ২২ ঘণ্টা পর

পাথরঘাটা (বরগুনা): বরগুনার পাথরঘাটার বিষখালি নদীতে বরগুনা সদর মৎস্য বিভাগের অভিযানের সময় জেলেদের মারধরের সময় নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ জেলে মো. রিপনের মরদেহ ২২ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে বিষখালী নদীর কালমেঘা টুলু পয়েন্টের কাছ থেকে রিপনের মরদেহ উদ্ধার করে জেলেরা।

 

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে বিষখালীর নদীর দক্ষিণ কুপধোন এলাকায় বরগুনা জেলা মৎস্য অভিযানের এক পর্যায়ে জেলে রিপন বিষখালী নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় আরও দুই জেলে আহত হন।

কালমেঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম নাসির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত জেলে মো. রিপন (৪১) উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের দক্ষিণ কুপদোন গ্রামের মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। আহত জেলেরা হলেন– মো. রাসেল একই এলাকার নুরু মোল্লার ছেলে এবং সুলতান হাওলাদারের ছেলে দেলোয়ার হোসেন।  

এদিকে শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে রিপনের মরদেহ কালমেঘা টুলু পয়েন্টে উদ্ধার করে নিয়ে এলে প্রায় পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ জড়ো হয়। এবং এ ঘটনায় জড়িত জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে। ৎ

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির, জেলা পরিষদের সদস্য এনামুল হোসাইন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম নাসিরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

স্থানীয় সূত্র ও আহত দুই জেলে জানান, প্রতিদিনের মতো রিপন, রাসেল ও দেলোয়ার দুটি ট্রলার নিয়ে বিষখালী নদীতে মাছ ধরার জন্য যায়। রাত আড়াইটার দিকে স্পিডবোট নিয়ে বরগুনা সদর উপজেলার মৎস্য বিভাগ অবৈধ খুঁটি অপসারণের জন্য অভিযানে আসে। তখন ওই দুটি ট্রলারকে ধরে সেখানে থাকা জেলেদের মারধর করেন তারা। মারধরের একপর্যায়ে রিপন নদীতে ঝাঁপ দিলে পরবর্তী সময়ে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর রাসেল ও দেলোয়ারকে নিয়েই অভিযান চালায় মৎস্য বিভাগ। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে অভিযান শেষে রাসেল ও দেলোয়ারকে তীরে ছেড়ে দেয়।  

স্থানীয় যুবলীগ নেতা তাওহীদ দীপু জানান, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা ফিরে আসা জেলেদের থেকে শুক্রবার সকাল ৯টার পর আমরা জানতে পারি। এরপর থেকেই আমরা নদীতে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে খোঁজ করি। এরপর জোয়ার শুরু হলে পুনরায় শুক্রবার রাত ১০টায় একযোগে বিশটি ট্রলারে নিয়ে অনুসন্ধানে নামি। রাত ১২টার দিকে কালমেঘা টুলু পয়েন্টের কাছের একটি বনের ভেতর রিপনের মরদেহ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।  

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম নাসির জানান, সন্ধান পাওয়ার পর পাথরঘাটা থানা পুলিশকে জানালে রাত দেড়টার দিকে পুলিশ বিষখালী নদী থেকে  মরদেহ উদ্ধার করে।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) সাইফুজ্জামান জানান, মরদেহ উদ্ধার করে পাথরঘাটা থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য সকালে মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে জেলা মৎস্য বিভাগের অভিযানে জেলে নিহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে কালমেঘার জেলে পল্লী। সেখানে কয়েকশ' জেলে জড়ো হয়ে মাইকে বিক্ষোভ করতে শোনা গেছে। এঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিক্ষুব্ধ জেলেদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।