ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্লাস্টিকের খেলনার ভিড়ে বিলুপ্তির পথে মাটির হাঁড়ি-পাতিল-পুতুল

মো. নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৪
প্লাস্টিকের খেলনার ভিড়ে বিলুপ্তির পথে মাটির হাঁড়ি-পাতিল-পুতুল

লক্ষ্মীপুর: কয়েক বছর আগেও গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মেলাগুলোতে মাটির তৈরি বিভিন্ন ধরনের খেলনার পসরা বসতো। বিশেষ করে ঈদ কিংবা বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি নানা রঙয়ের কারুকার্য করা হাঁড়ি-পাতিল, পুতুল, নৌকা, পালকি, হাতি, ঘোড়া, টিয়াপাখি, হাঁস, আম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট ছোট খেলনা বিক্রি হতো।

 

ছোটদের কাছে ছিল পছন্দনীয় এসব খেলনা পাওয়া যেত অনেক কম দামেও। কিন্তু প্লাস্টিকের যুগে মাটির তৈরি এসব খেলা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। ছেলে-মেয়েদের কাছেও এগুলোর চাহিদা এখন আর তেমন একটা নেই। প্লাস্টিকের তৈরি খেলনার দিকে ঝুঁকে পড়েছে তারা। ফলে অনেকটা বিলুপ্তির মুখে মাটির এসব মৃৎশিল্প।

ঈদ বা পহেলা বৈশাখের মেলা উপলক্ষে কুমার সম্প্রদায়ের লোকেরা মাটির তৈজসপত্র তৈরি করতেন। অনেকের কাছে মৃৎশিল্পই ছিল জীবিকার মাধ্যম। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের হাত ধরে মেলাতে ছড়িয় পড়তো মাটির তৈরির বিভিন্ন পণ্য। কিন্তু মাটির তৈজসপত্রের চাহিদা কমে যাওয়ায় এসব ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে কুমার সম্প্রদায়ের লোকেরা। তাই এখনকার মেলায় মাটির খেলনা তেমন চখে পড়ে না।  

ফরহাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের ছোটবেলায় মাটির তৈরি খেলনায় আমাদের ভরসা ছিল। ঈদের দিন ভোর বেলায় বন্ধুরা মিলে ঈদের মাঠে আসতাম। মাটির খেলনা কিনে বাড়ি ফিরতাম। তখন প্লাস্টিকের খেলনা বলতে কিছুই ছিল না। মাটির খেলনা দেখলে পুরনো শৈশব মনে পড়ে যায়।

মাটির খেলনা বিক্রেতা সংকর কুমার বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি ঈদের মেলায় মাটির তৈরি খেলনার পসরা সাজিয়ে বসি। একসময় প্রচুর বিক্রি করতাম। তখন প্লাস্টিকের খেলনা ছিল না। কিন্তু এখন বিক্রি কমে গেছে। ছেলে-মেয়েরা মাটির তৈরি জিনিসপত্র কম কিনছে। এখন কোনোভাবে চলছে, অদূর ভবিষ্যতে পুরনো এসব জিনিসপত্র বিলুপ্ত হয়ে যাবে। হয়তো মৌসুমি এ ব্যবসা ছেড়ে দিতে হবে।  

তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫-২০ বছর আগেও আমাদের কুমার বাড়িতে মৃৎশিল্পে কাজ হতো। মাটির তৈরি খেলনার পাশাপাশি গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত হাঁড়ি-পাতিলও তৈরি হতো। এখন আর নেই। মৃৎশিল্পীরাও নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।