ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২২ দিন আটকে রেখে কিশোরীকে ধর্ষণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নামে মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪
২২ দিন আটকে রেখে কিশোরীকে ধর্ষণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নামে মামলা

সিলেট: ভালো কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সিলেটে এক কিশোরীকে ২২ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।  

শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা।

মামলার প্রধান আসামি আব্দুস সালাম। নগরের লালাদিঘির পার এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে তিনি এবং ১০ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি তিনি।  

মামলার অপর আসামি আব্দুল মনাফ (৩৮) একই এলাকার ইশাদ মিয়ার ছেলে। তিনি সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য।  

এছাড়াও অজ্ঞাত কয়েকজনকে এই মামলার আসামি করা হয়েছে। মামলার আরেক আসামি রেখা বেগম নগরের ঘাসিটুলা মতিন মিয়ার কলোনির বাসিন্দা।  

এদিকে ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে ইতোমধ্যে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।  

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন শিপন বাংলানিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি গত জানুয়ারিতে ঘটলেও শুক্রবার ভিকটিমের মা অভিযোগ দায়ের করলে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে, দ্রুতই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হবে।  

মামলায় উল্লেখ করা হয়, নির্যাতিতা ওই কিশোরী নগরের শেখঘাটের একটি বোতল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতো। পরিবারের সদস্যরা ওই কিশোরীকে বাসায় রেখে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। এই সুযোগে একই কলোনির বাসিন্দা রেখা বেগম লালদিঘীর পাড়ের আবদুস সালামের সঙ্গে কিশোরীকে পরিচয় করিয়ে দেয়। আবদুস সালাম ‘ভালো কাজ’ দেওয়ার প্রলোভন দেখায়।

গত ৭ জানুয়ারি রেখা বেগম ভালো কাজের কথা বলে কিশোরীকে আবদুস সালামের লালদিঘীর পাড়স্থ বাসায় নিয়ে যায়। পরে বাসার একটি রুমে ২২ দিন আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়। পরিবারের সদস্যরা বাসায় ফিরে কিশোরীকে না পেয়ে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ নেন। কিন্তু কোথাও না পেয়ে থানায় জিডি করতে চাইলে রেখা বেগম বাধা দিয়ে তাদেরকে আবদুস সালামের কাছে নিয়ে যায়। আবদুস সালাম কিশোরীকে উদ্ধারের ব্যাপারে আশ্বাস দেয়। কয়েকদিন পর পরিবারের সদস্যরা আবারও আবদুস সালামের কাছে গেলে সে জানায়, লন্ডন প্রবাসী একটি পরিবারের কাছ থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় লন্ডন প্রবাসী পরিবারের পরিচয় জানতে চাইলে আবদুস সালাম ক্ষেপে যায়। কিন্তু নির্যাতিতা কিশোরী ধর্ষিত হওয়ার ঘটনা খুলে বললে আব্দুস সালাম প্রাণনাশের হুমকি ও তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়।

এ ঘটনার ৩ দিন পর আবদুস সালাম বিয়ের কথা বলে ওই  কিশোরীকে তুলে নিয়ে যায়। পরে মামলার আসামি আবদুল মনাফের মাধ্যমে তাকে হবিগঞ্জে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আটকে রেখে তাকে আবদুস সালাম ও আবদুল মনাফসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন  কিশোরীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সেখান থেকে গত ২৬ মার্চ এক আত্মীয়ের মাধ্যমে কৌশলে কিশোরীকে উদ্ধার করে আনা হয়।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ভিকটিম বিজ্ঞ আদালতে ২২ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪
এনইউ/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।