ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢামেকে ওষুধসহ ধরা ব্যক্তি ও ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুলছে না কর্তৃপক্ষ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪
ঢামেকে ওষুধসহ ধরা ব্যক্তি ও ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুলছে না কর্তৃপক্ষ

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) নতুন ভবনের নিচতলা থেকে প্রতিষ্ঠানের লোগোযুক্ত সরকারি কিছু ওষুধসহ এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরার ব্যাপারে কেউ মুখ খুলছেন না।

সোমবার (১৮ মার্চ) হাসপাতালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকা আনসার সদস্যরা যে ব্যক্তিকে ধরেছেন, তিনি এক রোগীর স্বজন বলে দাবি করা হচ্ছে।

নিরাপত্তার স্বার্থে তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না।  

জানা গেছে, ওই ব্যক্তিকে ঢামেকের ওষুধসহ ধরার পর আনসার সদস্যরা কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যান। ওই ব্যক্তি জানান, তিনি ঢামেকের নতুন ভবনের ৮তলায় দুই নার্সের কাছ থেকে সরকারি লোগোযুক্ত ওষুধগুলো কিনেছেন।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দিনভর ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে প্রশাসনিক ব্লকে গণমাধ্যমকর্মীরা গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বশীল কেউ বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নারাজ।

হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে, যে দুজন নার্সের কাছ থেকে ওই ব্যক্তি ওষুধ কিনেছেন হাসপাতালে পরিচালকের কক্ষে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে দুই নার্সের নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়নি।

এই বিষয়গুলো জানতেই বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী দিনভর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করেন। কিন্তু ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে প্রশাসনিক ব্লকের কর্মকর্তারা কেউ মুখ খোলেননি।

রাতে ঢামেকের নার্স নিয়ন্ত্রণকারী সেবা তত্ত্বাবধায়ক কারিমা খাতুনের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয় বাংলানিউজের। তিনি বলেন, বিষয়গুলো হাসপাতাল পরিচালক স্যার দেখছেন। এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না।

তাকে প্রশ্ন করা হয়- হাসপাতালে নার্সরা কে কোথায় ডিউটি করবেন, ওয়ার্ডে কাকে ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হবে, এসব কিছু দেখভালের দায়িত্ব আপনার। এ অবস্থায় সরকারি ওষুধ বিক্রির ঘটনায় আপনার তত্ত্বাবধানে থাকা দুজন নার্সের নাম এসেছে। উত্তরে কারিমা বলেন, আগেই বলেছি সবকিছু পরিচালক স্যার দেখছেন। তিনিই বলবেন। আমি কিছুই বলতে পারব না।

ঘটনার দিন থেকে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।

মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সোমবার এক ব্যক্তির কাছ থেকে সরকারি লোগোযুক্ত ওষুধ পাওয়ার বিষয়টি পরিচালক স্যার জানেন। বিষয়টি উনি দেখছেন বলে আমি জেনেছি। এ ছাড়া নুরুল ইসলাম আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

ঢামেকের আনসার সদস্যরা জানিয়েছেন, সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে নতুন ভবনের নিচতলা দিয়ে ওই ব্যক্তি বেরিয়ে যাওয়ার সময় তার ব্যাগ তল্লাশি করা হয়। এ সময় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের লোগোযুক্ত পাঁচ/ছয় প্রকারের কিছু ওষুধ তার কাছ থেকে জব্দ করা হয়।

প্রাথমিকভাবে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, তার স্ত্রী নতুন ভবনে ভর্তি। গুরুতর অসুস্থ। তিনি নতুন ভবনের স্টাফের কাছ থেকে ওষুধগুলো কিনেছেন। ঢামেক পরিচালক প্রশাসনিক কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় কারা জড়িত সে ব্যাপারে জানার চেষ্টা চলে। এ সময়ের মধ্যে অন্তত ৫০ বার কল আসে, আটক ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য।

উল্লেখ্য, ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের কাছে কখনোই সরকারি ওষুধপত্র দেওয়া হয় না। নার্সরা গিয়ে রোগীদের সরকারি ওষুধ খাইয়ে থাকেন। তা ছাড়া সরকারি ওষুধ বিক্রয় সম্পূর্ণ আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। ওই ব্যক্তি ওষুধগুলো কিনেছেন নাকি অন্যভাবে সংগ্রহ করেছেন, যেভাবেই হোক সেগুলো বের করার চেষ্টা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।