ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সাংবাদিককে কারাদণ্ডের ঘটনায় তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৪
সাংবাদিককে কারাদণ্ডের ঘটনায় তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: শেরপুরে তথ্য চাওয়ায় এক সাংবাদিককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়, তাহলে সেটার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে সুরাহা করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।  

তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত করছি, তদন্তসাপেক্ষে যাতে সঠিক তথ্য বের করা হয়।

কেউ যাতে বাংলাদেশে—সে সাংবাদিক, শিল্পী বা যে-ই হোন না কেন—যাতে ক্ষমতার অপব্যবহারের কাছে ভিকটিম না হন, সেটি আমরা নিশ্চিত করবো। এ বিষয়ে আপনারা নিশ্চিত থাকতে পারেন।

রোববার (১০ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুইয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন কথা বলেন।

তথ্য চাওয়ায় আদালত বসিয়ে সাংবাদিককে কারাদণ্ড নিয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত পরশু আমার কাছে এ তথ্য এসেছে। আমি দুধরনের তথ্য পেয়েছি। একটি হচ্ছে, তথ্য চাওয়ার অপরাধে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আরেকটি হচ্ছে, সে অসদাচরণ করেছিল। তিনি সেখানের একজন নারীকে উত্ত্যক্ত করেছেন, খারাপ ব্যবহার করেছেন।

পরস্পরবিরোধী মিশ্র তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে কোনটা সত্য, তা আমি নিশ্চিত হতে পারছি না। আমি চাচ্ছি, এটার একটি তদন্ত হোক, তারপর ঘটনা কী ছিল; সেটা বের করি। এরই মধ্যে তথ্য কমিশন থেকে সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধান তথ্য কমিশনের সঙ্গেও কথা বলেছি, তার আরও বিস্তারিত তদন্ত করে, যেটা সঠিক—সেটিই আমরা করবো বলে যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।

সেই পর্যন্ত কী ওই সাংবাদিক কারাগারে থাকবেন, জানতে চাইলে আরাফাত বলেন, যখন একটি আইনের মধ্যে এসে আদালত একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, তখন তো আসলে আমাদের কিছু বলার থাকে না। আদালত বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাকে বের করার জন্য কোনো আইন তথ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। এ বিষয়ে এখন আদালতে যেতে হবে। আমরা যেটি করবো, এখানে যদি অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকে—ইউএনও কিংবা সরকারি কোনো কর্মকর্তার পক্ষ থেকে—সেটিও আমরা দেখবো।

এখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইন কিংবা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যপ্রতিমন্ত্রী বলেন, আইনের প্রয়োগ মানেই ক্ষমতার অপব্যবহার বলে আমি করি না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে অপব্যবহার করার সুযোগ থাকে। কাজেই এখন পুরো বিষয়টি না জেনে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ঠিক হবে না। তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটলে, আমি সেখানে যুক্ত হয়, পরশু দিন থেকে আমি এটার মধ্যে ঢুকেছি। আমি খোঁজ খবর রাখছি, পর্যবেক্ষণ করছি।

ওটিটি প্লাটফর্ম এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা বাংলাদেশি চ্যানেলগুলোকে দেখাচ্ছে। এর প্রতিবাদে কেবল অপারেটররা সোমবার ধর্মঘট ডেকেছেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি কোয়াব (কেবল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) মেম্বারদের বলবো এ ধরনের ধর্মঘট ডাকা থেকে বিরত থাকার জন্য। কেন বলব- কারণ‌ আমি তো তাদের সঙ্গে বসেছি, কথা বলেছি। তারা এ বিষয়গুলো আমার কাছে তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, এগুলো তুলে ধরার পর আমি একটি বিষয় পরিষ্কারভাবে বলেছি, আইনের বাইরে গিয়ে কেউ কোনো কিছু করতে পারবে না। ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো যা করছে সবগুলো চ্যানেলকে প্যাকেজ করে এটিতো বেআইনি। আমি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছি এগুলো দেখার জন্য। এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়েছি। কোয়াব থেকে দুজন, এটকো থেকে দুজন, আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন থেকে দুজন প্রতিনিধি পাঠাতে, ডিটিএইচ থেকেও প্রতিনিধি পাঠাতে বলা হয়েছে। তাদের নিয়ে একটি কোলাবরেশন সেল করা হয়েছে, শিগগিরই মিটিং হবে।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, সেখান থেকে সবগুলো সমস্যার সমাধানের পথে আমরা এগোবো। আমরা যেহেতু কথাগুলো শুনেছি এবং কাজ করছি, মাঝপথে এসে আমি মনে করি এ ধরনের ধর্মঘটে যাওয়া ঠিক হবে না। আমি তাদের অনুরোধ করব এগুলোর মধ্যে না গিয়ে আমরা তো কাজ করছি, কথা বলছি। আইনের মধ্য থেকে সব সমস্যার সমাধান করব।

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা মূল ধারার গণমাধ্যমে অপতথ্য কীভাবে ডিল করে সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রদূত আরেকটি কথা বলেছেন যে, রেগুলেশন গণমাধ্যমে স্বাধীনতাকে যেভাবে ব্যাহত করতে পারে, আবার গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সংরক্ষণ করার জন্য রেগুলেশন দরকার। আমি চাচ্ছি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা পাশ্চাত্যের দেশগুলো অপতথ্য কীভাবে ব্যবস্থাপনা করে সেই বিষয়গুলো জানা ও বুঝা।

বাংলাদেশের সরকার এবং মানুষের প্রতি ফ্রান্সের আস্থা আছে জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্স বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায়। অপতথ্য মোকাবিলায় তারা আমাদের সঙ্গে কাজ করবে। এমনকি তাদের চ্যানেল ফ্রান্স-২৪ সরকারি সাবসিডি নিয়ে চলে, আমি বলেছি বিটিভির সঙ্গে আমরা একটি কোলাবারেশন করতে চাই। সে বিষয়ে আমি সহযোগিতা চেয়েছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৪
জিসিজি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।