ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভোলায় জাটকা শিকারের মহোৎসব, ইলিশের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
ভোলায় জাটকা শিকারের মহোৎসব, ইলিশের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা

ভোলা: নিষিদ্ধ জাল দিয়ে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে অবাধে শিকার করা হচ্ছে জাটকা। অসাধু জেলে চক্র সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা ইলিশ শিকারে চালাচ্ছে মহোৎসব, যা প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে আড়তে।

 

জাটকা রক্ষায় অভিযান চললেও সেই নিষেধাজ্ঞা যেন কিছুতেই মানছেন না জেলেরা। এতে একদিকে যেমন মাছের উৎপাদন ও বৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে নদীগুলো ইলিশ শূন্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে মৎস্য অফিস বলছে, জাটকা সংরক্ষণে তাদের অভিযান চলছে।

মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, মশারি জালে নদীর চারপাশে বেড় দিয়ে শিকার করা হচ্ছে জাটকা ইলিশ। এ যেন ইলিশ শিকারের এক মহোৎসব। আর সেই মাছ প্রকাশ্যেই হাঁকডাক দিয়ে উপকূলের আড়তে বিক্রি হচ্ছে। সেখান থেকে চলে যাচ্ছে স্থানীয় বাজারে। জাটকা রক্ষায় নেই কঠোর অভিযান বা টহল। ভোলার মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে নির্বিচারে জাটকা শিকারের এমন চিত্র প্রতিদিনের।

জানা গেছে, শুধু মশারি জাল নয়। বেহুন্দি, কারেন্ট, চরঘেরা ও ধরা জাল দিয়ে শিকার করা হচ্ছে জাটকা ইলিশ। জেলেরা বলছেন, পেটের দায়ে তারা বাধ্য হয়ে ইলিশ শিকার করছেন।

জেলে জসিম, সিরাজ ও ইদ্রিস বলেন, নদীতে সারাদিন জাল বেয়ে বড় মাছ পাওয়া যাচ্ছে না, তাই ছোট মাছ ধরা পড়লেও সেটাই ধরছি। অনেক ধারদেনা পড়ে আছে, বাধ্য হয়েই জাটকা ধরছি।

আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, জেলেদের আহরিত জাটকা ইলিশ প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে আড়তে। এ বছর ভরা মৌসুমে ইলিশ সংকট থাকায় ভালো সময় যায়নি জেলেদের। আর তাই জাটকা শিকারের বেপরোয়া জেলেরা, বলছেন আড়ৎদাররা।

কয়েকজন আড়তদার জানান, সবাই জানে জাটকা ধরা নিষেধ কিন্তু যারা ধরছে এটা অন্যায় জেনে ধরছেন জেলেরা।

তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, এমন অবস্থা চলতে থাকলে মাছের বংশ বিস্তার ও উৎপাদন কমে ইলিশ শূন্য হয়ে পড়বে নদী।  

শাহিন ও গিয়াস নামের ক্রেতা বলেন, জাটকা শিকার বন্ধে অভিযান আরও জোড়ালো করা প্রয়োজন। অন্যথায় জেলেরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠবে।  

এদিকে জাটকা ইলিশ সংরক্ষণে কঠোর অভিযান চলছে বলে দাবি করেছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তার মো. আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, নিষিদ্ধ জাল দিয়ে যাতে জাটকা শিকার না হয় সে জন্য অভিযান চলছে। এরই মধ্যে ২৩০টি অভিযান ও ৭৪টি মোবাইল কোর্টে ২৪ জেলেকে জেল জরিমানা এবং ৫.৭ মেট্রিক টন জাটকা জব্দ করা হয়েছে।  

উল্লেখ্য, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া জাটকা কর্মসূচি চলবে পরবর্তী ৮ মাস। তাই ৩০ জুন পর্যন্ত ১০ ইঞ্চির নিচে ইলিশ ধরা, পরিবহন ও বিক্রি নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।