ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সরকারি বই বিক্রি, ট্রাক জব্দ

ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
সরকারি বই বিক্রি, ট্রাক জব্দ

পটুয়াখালী: জেলার কলাপাড়া উপজেলায় নতুন শিক্ষা বছরের সরকারি বিনামূল্যের বই ফেরিওয়ালাদের কাছে কেজি দরে বিক্রি করে দিয়েছেন মোয়াজ্জেমপুর ছালেহিয়া সিনিয়র আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুবকর সিদ্দিক। সংবাদ পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কৌশিক আহমেদ বইগুলো জব্দ করেছেন।

এ সময় ট্রাকে থাকা প্রায় চার টন বই জব্দ করেন, যার বাজার মূল্য আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকা।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মহিপুর থানার মোয়াজ্জেমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটলে জনসম্মুখে আসে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালের দিকে।

জানা গেছে, মাধ্যমিক স্তরের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচিতি, ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, ক্যারিয়ার শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, চারুপাঠ, কৃষি শিক্ষা, আনন্দপাঠ, গার্হস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ের বইগুলো ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করেছেন মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুবকর সিদ্দিক।

উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর সালেহীয়া আলিম মাদরাসার প্রধান শিক্ষক একেএম আবুবকর সিদ্দিক ও বাংলা প্রভাষক হাসান রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গোপনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের সরকারি বিনামূল্যের বই কেজি দরে ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে দেন। পরে স্থানীয়রা ফেরিওয়ালাদের কাছে সরকারি বই দেখতে পেয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জবাবে তারা প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে বইগুলো কিনেছেন বলে জানান।

ফেরিওয়ালা কাওছার শেখ জানান, তিনি বইগুলো মোয়াজ্জেমপুর ছালেহিয়া আলিম মাদরাসা থেকে কিনেছেন। বইগুলোর গায়ে ‘২০২১ শিক্ষাবর্ষ’ ও ‘২০২২ শিক্ষাবর্ষ’ লেখা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মামুন বলেন, আমরা সন্ধ্যার পরে মাদরাসার সামনে একটি ট্রাক ও কয়েকজন লোককে দেখতে পাই। বিষয়টি আমাদের সন্দেহজনক মনে হলে আমরা স্থানীয় কয়েকজনকে খবর দেই। লোকগুলো বিষয়টি টের পেয়ে দ্রুত মাদরাসা মাঠ ত্যাগ করেন। পরে আমরা এক কিলোমিটার দূরে গিয়ে ট্রাকসহ তাদের আটক করি। সেখানে কেন এসেছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘এই স্কুল থেকে কিছু বই কিনেছি’। দেখতে চাইলে তারা উপস্থিত লোকজনের সামনে বইগুলো দেখান।

সরকারি বই বিক্রির বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবুবকর-এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি একা নই, অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে রেজুলেশন করে বইগুলো বিক্রি করেছি।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা বিক্রি করা বইগুলো জব্দ করেছি। প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে পাঁচ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। পরে তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সহকারী কমিশনার ভূমি কৌশিক আহমেদ বলেন, সরকারি বই বিক্রি করার সময় একটি ট্রাক জব্দ করি, পরে ট্রাকসহ বইগুলো মহিপুর থানায় হস্তান্তর করেছি। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, রাতের অন্ধকারে বই বিক্রি করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে আমরা বইগুলো জব্দ করেছি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা আইসিটি) মরিয়ম বেগম বলেন, তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বই বিক্রির ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪
এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।