ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এসএমএস’র মাধ্যমে চালের বাজার অস্থির করা হয়: ভোক্তার ডিজি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৪
এসএমএস’র মাধ্যমে চালের বাজার অস্থির করা হয়: ভোক্তার ডিজি

বরিশাল: এসএমএস’র (ক্ষুদেবার্তা) মাধ্যমে ডিম, ব্রয়লার মুরগির মতো চালের বাজারও অস্থির করে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।

তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গে চালের বড় বড় কয়েকশ কল আছে।

তারা কীভাবে একইভাবে জোটবদ্ধ হয়? তাহলে এখানেও ডিম, ব্রয়লার মুরগির মতো এসএমএস’র মাধ্যমে গোটা চালের বাজারটিকে অস্থির করে দেওয়া হয়। আর এটা যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় কার্যক্রম নেব। অর্থাৎ এক জোটবদ্ধ হওয়া কিংবা একজন দাম বাড়িয়েছে বলে বাকিরাও বাড়িয়েছে- এগুলোকে বন্ধ করা যায়।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বরিশালের ফরিয়াপট্টি, চকবাজার এলাকার পাইকারি বাজার পরিদর্শন করেন ভোক্তার ডিজি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান বলেন, মাঝে মাঝে সুযোগ নিয়ে ১৭ কোটি ভোক্তাকে প্রতারিত করছে ক্ষুদ্র কয়েকটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। এর আগে আলু, ব্রয়লার মুরগি, ডিম নিয়ে যা করছে আজ চাল, কাল পেঁয়াজ নিয়েও তা করা হচ্ছে, আর এদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান রয়েছে আমাদের।

মোকামে চালের দাম বাড়ানোর পেছনে একটি চক্র ‘সারা দেশে ধানের দাম বেড়েছে’ বলে প্রচার করেছে। ধানের দাম যদি বেড়েও থাকে সেই চালটা তো দুই মাস পরে অর্থাৎ বৈশাখ মাসে বাজারে আসবে। কিন্তু এখন ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে চার টাকা বেশি দামে যে চালটা পাওয়া যাচ্ছে তার ধানের সোর্স তো আগের সোর্সের সাথে একই। অর্থাৎ বাজারের বর্তমান চালের ধানটা আগে কিনে মাড়াই করে বিভিন্ন জায়গায় স্টক করে রাখা। বর্তমানে কস্টিংয়ের কোনো ডিফারেন্সও হওয়ার কথা না। কারণ, ট্রাক ভাড়া, দোকান ভাড়া, কর্মচারি বেতন বাড়েনি। তাহলে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলে ১৫ দিনের ব্যবধানে আগে ধানের চালের দাম বাড়িয়ে দেওয়া অযৌক্তিক। আর অযৌক্তিক বিষয়ের বিরুদ্ধে আমরা কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, ঠিক ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে একই মোকামের একই ভাউচারে একই চাল ৪ থেকে সাড়ে ৪ টাকা কম-বেশি হচ্ছে। অর্থাৎ ডিসেম্বরের শেষে যে চালটা এসেছে এবং জানুয়ারির ১০-১২ তারিখে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে সেখানে ৪ টাকার ডিফারেন্স ফরিদপুর ও কুষ্টিয়ার আড়ত থেকেই হচ্ছে। বরিশালে তেমন কোনো ব্যত্যয় পাওয়া যায়নি। তারা যে দামে চাল কিনছে আর তার ওপর সামান্য লাভ করেই বিক্রি করে দিচ্ছে। তবে এখানে হাজার হাজার চালের বস্তা রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তরের স্থানীয় কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা যেন তদন্ত করে দেখে আগের কম দামের কেনা চাল স্টক করে বাড়তি দামে বিক্রি করছে কিনা। কারণ, স্টকের চাল যদি বাড়তি দামে বিক্রি হয়, সেটাও একটি বড় ঘাপলা।

ভোক্তার ডিজি বলেন, বরিশাল বা যেসব জায়গায় পাইকারি ও খুচরা চাল বিক্রি হচ্ছে সেখান থেকে তথ্য নিচ্ছি আমরা। আর এখান থেকে তথ্য নিয়ে যে সোর্স থেকে দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সেখানে তদন্ত করবো। ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনে সিলগালা করে দেব, আইনের আওতায় নেব।

এ সময় তিনি আসন্ন রমজান উপলক্ষে ডাল, চিনি, তেলসহ রমজানের পণ্য নিয়ে যাতে কারসাজি না করতে পারে সেজন্য জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কাজ করছে বলে জানান। অপরদিকে বরিশালের পাইকার মার্কেটে পাওয়া খোলা ভোজ্য তেলের অপরিষ্কার ড্রাম দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ডিজি বলেন, ভোজ্য তেলের ক্ষেত্রে লেভেলহীন ড্রামে করে পাম তেল, সুপার পাম এবং সয়াবিন পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দামেও বড় পার্থক্য রয়েছে। তবে কেউ যদি পাম নিয়ে সয়াবিনের নামে ও দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করে সাধারণ মানুষ তা জানবে না। এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

বাজার পরিদর্শন শেষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আয়োজনে চাল, ভোজ্য তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অংশীজনের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৪
এমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।