ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

টাঙ্গাইলে পৌষ সংক্রান্তি মেলায় হাজারো মানুষের ঢল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৪
টাঙ্গাইলে পৌষ সংক্রান্তি মেলায় হাজারো মানুষের ঢল

টাঙ্গাইল: পৌষ মাসের শেষের দিন টাঙ্গাইলের বাসাইলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পৌষ সংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ পৌষ সংক্রান্তি মেলা যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে।

হাজারো দর্শনার্থীদের ভিড়ে মিলন মেলায় পরিণত হয় চাপড়াবিলের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা শত বছরের সিদ্ধেশ্বরী হিজল গাছের আঙ্গিনায়।  

জানা গেছে, পৌষ মাসের শেষের দিন বাঙালি সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ উৎসবের দিন। বাঙালির সংস্কৃতিতে বারো মাসে তেরো পার্বণের একটি পার্বণ হলো পৌষ সংক্রান্তি।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দিনব্যাপী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাসুলিয়া সৌন্দর্যের রানি হিজল গাছের আঙ্গিনায় পালিত হয়েছে এ মেলা।

সরেজমিনে দেখা যায়, নারী পুরুষ আর শিশু-কিশোরের ভিড়ে কোলাহল মুখর হয়ে পরে মেলা প্রাঙ্গণ। হাজারো মানুষের ঢল নামে এ মেলায়। এ মেলায় বাতাসা, দই মিষ্টির দোকান, ভাজা পেঁয়াজু, চানাচুর, বাদাম, মাটি ও বাঁশ বেতের তৈজসপত্র, চটপটির দোকান, শীত বস্ত্রের দোকান নিয়ে বসে দোকানিরা।

মেলায় ঘুরতে আসা পলাশ সূত্রধর বলেন, ছোট সময় থেকে দেখে আসতেছি হিজল গাছের নিচে এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ছোট সময় দাদার সঙ্গে এই মেলায় আসতাম। আজকে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে এ মেলায় এসেছি। মানত ছিল তা দিয়ে গেলাম ভগবান আশা পূরণ করবেন। তবে জমির আইল ধরে মেলায় আসতে হয়। বৃদ্ধ মানুষ নিয়ে আসা খুব কষ্ট হয়।

মেলায় ঘুরতে আসা ধীরা মণ্ডল বলেন, এই মেলা যুগ যুগ ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এ মেলায় আসেন। আমি আমার নাতিকে নিয়ে মেলায় এসেছি। সব বয়সি মানুষ এই মেলায় আসেন। মেলায় এসে কেনাকাটা করেন।

মিরিকপুর এলাকার দুখিরাম পাল বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী একটি উৎসব পৌষ সংক্রান্তি। পৌষ মাসের শেষের দিন এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের বাড়িতে বিভিন্ন পিঠা বানিয়ে থাকে। মেলা উপলক্ষে এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। আত্মীয়-স্বজন প্রতিটি বাড়িতে ঘুরতে আসেন। যুগ যুগ ধরে হিজল গাছের সামনে এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হিজল গাছের নিচে পূর্জা-অর্চণা অনুষ্ঠিত হয়। অনেকেই মানত করে বাতাসা-দুধ নিয়ে আসেন। দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এই মেলায় আসেন। তাদের চাহিদা মতো কেনাকাটা করেন।

বাসাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহেল বলেন, বাসাইলের বাসুলিয়া হিজল গাছের সামনে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী পৌষ সংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মেলাটি যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে। প্রতিবছর পৌষ মাসের শেষের দিন এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। দর্শনার্থীরা জমির আইল ধরে এই মেলায় আসেন। পরিকল্পনা রয়েছে হিজল গাছের সামনে রাস্তা করে দেওয়ার জন্য। সবার সহযোগিতায় রাস্তা করা হবে।

বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন জানান, বাসাইলের বাসুলিয়ায় হিজল গাছের সামনে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেলার নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সদস্য নিয়োজিত ছিল। মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।