ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গাজীপুরে ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৭

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩
গাজীপুরে ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৭ গাজীপুর মেট্টোপলিটনের পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলমের প্রেস ব্রিফিং

গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনখরিয়া এলাকায় রেললাইন কেটে ট্রেনে নাশকতার ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে গাজীপুর মেট্টোপলিটনের পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম প্রেস ব্রিফিং করে এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তাররা হলেন-নেত্রকোনার মদন থানার বারই বাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে আন্নাতুল ইসলাম (২৩), ময়মনসিংহের ভালুকা থানার বান্দীয়া এলাকার তাইজুদ্দীনের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), গাজীপুর মেট্টোপলিটনের সদর থানার রাজাবাড়ী উত্তরপাড়া এলাকার মৃত বিল্লাল হোসেন ভুইয়ার ছেলে মোঃ হাসান আজমল ভূইয়া (৫০), একই থানার ভানোয়া এলাকার তারিকুল ইসলাম দিপুর ছেলে জুলকার নাইন আশরাফি ও হৃদয় (৩৫), একই থানার উত্তর ছায়াথিথি এলাকার মৃত সোলায়মান মোড়লের ছেলে শাহানুর আলম (৫৩), একই থানার কানাইয়া পূর্বপাড়া এলাকার মৃত ওমেদ আলী মোল্লার ছেলে মো. সাইদুল ইসলাম (৩২) ও একই থানার মধ্য ছায়াবিধি এলাকার আফতাফ উদ্দিনের ছেলে  সোহেল রানা (৩৮)।

পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম আরো জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে একদল দুষ্কৃতকারী শ্রীপুর উপজেলার বনখরিয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেললাইন কেটে ফেলে। এরপর ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একজন মারা যায় এবং কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দুষ্কৃতকারী দলের জান্নাতুল ইসলাম ও মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারা জানায় কোনাবাড়ী এলাকা থেকে ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পরে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে একটি হায়েস গাড়ি ভাড়া করে। ওই গাড়ি নিয়ে ঢাকা যাওয়ার কথা থাকলেও তারা ঢাকায় না গিয়ে গাজীপুরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করতে থাকে। সবাই মুখোশ পরা অবস্থায় ছিল। এ অবস্থায় ড্রাইভার ভয় পেয়ে তাদের ঢাকায় না যাওয়া এবং মুখোশ পরার কারণ জিজ্ঞেস করলে তাদের মধ্যে একজন মুখোশ খোলে ড্রাইভারকে তার চেহারা দেখায়। তারপর ড্রাইভার তাকে চিনতে পেরে আর কিছু বলে না।  

ওই ভাড়াকৃত গাড়ি নিয়ে তারা রেললাইন কেটে নাশকতা ঘটানোর উদ্দেশে বের হয়। পথিমধ্যে তারা শিববাড়ী, জোড় পুকুরপাড়সহ আরও বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কয়েকজনকে গাড়িতে উঠায়। একপর্যায়ে তারা গাজীপুর সদর থানাধীন জোড় পুকুরপাড়স্থ ইবনে সিনহা তোহার বাড়ি থেকে রেললাইন কাটার যন্ত্রপাতি এবং দক্ষিণ সালনা, উসমান গণির ভাড়া দেওয়া ‘বাশ বাগান’ রেস্টুরেন্ট থেকে দুইটি গ্যাস সিলিন্ডার গাড়িতে উঠায়।  

এরপর তারা গাজীপুর শহরে ঘোরাঘুরি করে আনুমানিক রাত ৩ ঘটিকার পরে বনখরিয়া এলাকায় ঘটনাস্থল থেকে ৪-৫ কিলোমিটার দূরত্বে বনের পাশে গাড়ি রেখে হেঁটে তারা গ্যাস সিলিন্ডারসহ সরঞ্জমাদি নিয়ে বনখরিয়া চিনাই রেলব্রিজের পাশে যায়। সেখানে গিয়ে তারা তারা ২০ ফুট রেললাইন কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। পরে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। আটকরা সবাই বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মো. শফিকুল ইসলাম, গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম, রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন, গাজীপুর পিবিআই পুলিশ সুপার মাকছুদের রহমান, গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ইব্রাহিম খান ও আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩
আরএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।