ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফেনীতে মৎস্য কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর-ইউএনও অফিস ঘেরাও জেলেদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
ফেনীতে মৎস্য কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর-ইউএনও অফিস ঘেরাও জেলেদের হামলায় মৎস্য কর্মকর্তার ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে বিহনতি জাল জব্দ করে আগুন ও কেটে নদীতে ফেলার প্রতিবাদে মৎস্য কর্মকর্তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ জেলেরা হামলা চালিয়েছেন।  

এ সময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুর্য সাহা, জেলে কৃষ্ণ জলদাস, প্রাণ জলদাস, সুজন জলদাস, শ্রীধাম জলদাস ও নয়ন জলদাসসহ ৭ জন আহত হয়েছেন।

আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।  

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের শাহাপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জেলেরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার ব্যবহৃত গাড়ি ভাঙচুর করেছেন।

বিকেল ৪টার দিকে বিক্ষুব্ধ জেলেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে জালের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।  

ক্ষতিগ্রস্ত জেলেরা, প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, দুপুর ২টার দিকে জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে বড় ফেনী নদীর চরখোন্দকার মোহনায় অভিযান চালিয়ে নৌকায় থাকা ৩০-৪০টি বিহনতি জাল জব্দ করা হয়। দুটি জাল আগুনে পুড়ে দেওয়া হয় এবং বেশ কয়েকটি জাল কেটে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

এ খবরটি চরখোন্দকার জলদাস পাড়ায় ছড়িয়ে পড়লে জেলেরা দলবদ্ধ হয়ে শাহাপুর বাজারে গিয়ে জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার গাড়ির গতিরোধ করে হামলা চালায়। এ সময় দুই মৎস্য কর্মকর্তা ও তাদের সঙ্গীদের সঙ্গে জেলেদের সংঘর্ষ হয়। এতে দু'পক্ষের ৭ জন আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শাস্ত করে দুই মৎস্য কর্মকর্তাসহ তাদের সঙ্গীদের উদ্ধার করেন।

পরবর্তীতে দুই শতাধিক জেলে ইউএনও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। ইউএনও কামরুল হাসান ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে জেলেদের শান্ত করেন। বিষয়টি নিয়ে সন্ধ্যায় থানায় ইউএনও, ওসি, জেলে নেতা ও মৎস্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি সমঝোতা বৈঠকে বসেন।  

জেলেদের সর্দার প্রিয়লাল জলদাস ও জগদ্বিশ জলদাস বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিসের কর্মচারী রাজুর মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা জেলেদের কাছ থেকে কয়েকদিন ধরে মাথাপিছু এক হাজার টাকা করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছেন। দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে হঠাৎ করে বিনা নোটিশে নিরীহ জেলেদের জালগুলো জব্দ করেন। পরে আগুনে পুড়ে ও কেটে নদীতে ধ্বংস করে দেন। জেলেরা ঋণের কিস্তি নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন। জেলেদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। জালের ক্ষতিপূরণ না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন জেলেরা।

জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন ও তুর্য সাহা বলেন, বিহনতি জাল জব্দ করায় বিক্ষুব্ধ জেলেরা তাদের ওপর হামলা করে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি সমাধানে জেলে নেতা ও মৎস্য কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক চলছে। ওসি হাসান ইমাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
এসএইচডি/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।