ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সংকট নিরসনে সংলাপে গুরুত্ব বিদেশি কূটনীতিকদের

তৌহিদুর রহমান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২৩
সংকট নিরসনে সংলাপে গুরুত্ব বিদেশি কূটনীতিকদের মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক ও ইইউর পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল

ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সংলাপে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিদেশি কূটনীতিকরা।  তারা চাইছেন, রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপের মাধ্যমেই এই সংকট নিরসন করুক।

এ লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনাও করছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শর্তহীন ও সংবিধানের মধ্যে থেকে তারা সংলাপে বসতে রাজি।

চলমান রাজনৈতিক সংকট কাটাতে বিদেশি কূটনীতিকরাও তৎপরতা শুরু করেছেন। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ ঘিরে যে নতুন রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়েছে, সেই সংকটের নিরসন চান তারা। ২৮ অক্টোবরের সহিংস ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা সংলাপকেই জোর দিচ্ছেন।

বিএনপির ডাকা অবরোধের প্রথম দিন ৩১ অক্টোবর ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে পিটার হাস চলমান সংকট সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সংলাপের আহ্বান জানান। এরপর গত ২ নভেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার একটি বৈঠক করেন। দেড় ঘণ্টার ওই বৈঠকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে  বিএনপির ডাকা অবরোধের মধ্যেই আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। বৈঠকে ব্রিটিশ হাইকমিশনার চলমান সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন, সহিংসতা পরিহার এবং অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

এর আগে চলতি বছর জুলাই মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা তৈরিতে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অর্থবহ সংলাপে জোর দেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ইভান স্টিফেনেককে লেখা এক  চিঠিতে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের ওপর গুরুত্ব দেন। এদিকে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতাবাস অংশগ্রহণমূলক এবং নির্বাচনের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পথ খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেন।

তবে বিদেশি কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে সংলাপকে গুরুত্ব দেওয়া হলেও সেটা নাকচ করে আসছেন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নীতিনির্ধারকরা। বিরোধী পক্ষের সঙ্গে সংলাপের বিষয়টি নাকচ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন  বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কাউকে জোর করে নির্বাচনে নিয়ে আসা হবে না। তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে কি নির্বাচনের আগে সংলাপ হয়? সেখানে কোনো সংলাপ হয় না। তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে কেন সংলাপের কথা বলা হচ্ছে।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংলাপের বিষয়ে বলেছেন, আমরা দরজা বন্ধ রাখিনি, আলাপ-আলোচনা করতে চাই। তবে শর্ত ছাড়া এবং সংবিধান মেনে আলোচনায় এলে আমরা স্বাগত জানাব।

২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে বাধা দেওয়া ও হামলার অভিযোগে পরদিন ২৯ অক্টোবর হরতাল ডাকে বিএনপি। এরপর ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর অবরোধ ডাকে দলটি।  

এখন  নতুন করে আগামী ৫-৬ নভেম্বর আবার অবরোধ কর্মসূচি ডেকেছে বিএনপি। এদিকে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ ঘিরে  সহিংসতা ঘটনায় সরকার পক্ষ থেকে বিএনপিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বিএনপির সহিংসতার ভিডিও চিত্র ঢাকার বিদেশি কূটনীতিকদের সামনেও তুলে ধরেছে সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০২৩
টিআর/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।