ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রেম করে বিয়ের পর স্ত্রীকে বিক্রি, উদ্ধার করলেও মামলা নিচ্ছে না পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৩
প্রেম করে বিয়ের পর স্ত্রীকে বিক্রি, উদ্ধার করলেও মামলা নিচ্ছে না পুলিশ ইনসেটে অভিযুক্ত সেলিম রেজা

সাতক্ষীরা: দীর্ঘ একবছর প্রেম করে বিয়ের পর স্ত্রীকে সাতক্ষীরার আশাশুনি থেকে ঢাকায় এনে যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেন স্বামী সেলিম রেজা। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূকে উদ্ধার করা গেলেও এখনবধি অভিযুক্ত সেলিম রেজা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি পুলিশ।

 

জানা যায়, ইটভাটায় কাজ করতে নিয়ে যাওয়ার নামে ওই গৃহবধূকে ঢাকায় নিয়ে আসেন সেলিম।  গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে টাকার বিনিময়ে চার সহযোগীর হাতে স্ত্রীকে তুলে দিয়ে গ্রামে ফেরেন তিনি।

এদিকে মোবাইলফোনে মেয়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে না দেওয়ায় সন্দেহ হয় ভুক্তভোগীর মা সুফিয়া বিবির। পরে তিনি জানতে পারেন, জামাতা সেলিম রেজা আশাশুনিতে তার নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন।

এ খবরে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আশাশুনি থানায় সেলিম রেজার নামে অভিযোগ করেন সুফিয়া।

অভিযোগের ভিত্তিতে সেলিমকে থানায় ডেকে নিয়ে স্ত্রীসহ হাজির হতে তিনদিনের আল্টিমেটাম দেয় পুলিশ। তবে সেলিম রেজা বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।  

গত ৭ অক্টোবর একটি নম্বর থেকে ফোন থেকে সুফিয়া বিবিকে জানানো হয়, তার মেয়েকে ডুমুরিয়ার বরাতিয়া গুচ্ছ গ্রামের একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ডুমুরিয়া থানায় গিয়ে বিষয়টি জানান সুফিয়া।  

তার দেয়া তথ্যমতে পুলিশ ওই গুচ্ছ গ্রামে গিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখা ভুক্তভোগী গৃহবধূকে উদ্ধার করে এবং আশাশুনি থানায় হস্তান্তর করে।

এরপর সেলিম রেজাসহ শংকরকাটি গ্রামের নুর মোহাম্মদ, ডুমুরিয়া থানার বরাতিয়া গুচ্ছ গ্রামের পান্না খাতুন ও নাজমা, আশাশুনি ফকরাবাদ গ্রামের রিপন ও সাধনা খাতুন, বড়দল গ্রামের সালাউদ্দিনকে আসামি করে শ্যামনগর থানায় এজাহার দেন সুফিয়া। কিন্তু পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি।

মামলা না হওয়ার বিষয়ে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ডুমুরিয়া থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আমাদের কাছে দিয়েছিল। আমরা তার পরিবারকে শ্যামনগর থানায় মামলা করতে বলি।

এ বিষয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ওই পরিবারকে আদালতের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

নির্যাতন ও যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়ার বিষয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, ইটভাটায় কাজে যেতে রাজি হলে গত ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন সেলিম। ঢাকায় একটি বাড়িতে তিনদিন আটকে রেখে মানসিক ও যৌন নির্যাতন করা হয় তাকে। ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে সেলিম রেজা তাকে বিক্রি করে দেন। ওই দিনই রাত ৮টার দিকে চার ব্যক্তি তাকে ঢাকার একটি পতিতালয়ে নিয়ে যৌন কাজে বাধ্য করে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।