ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাঙনের কবলে কুমারখালীর চরঘোষপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
ভাঙনের কবলে কুমারখালীর চরঘোষপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ১৩ নম্বর চরঘোষপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পদ্মানদী ভাঙনের কবলে পড়তে শঙ্কায় এই বিদ্যালয়টি।

ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের পুরাতন একটি ভবনটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আবারও শুরু হয়েছে ভাঙন। খেলার মাঠসহ বর্তমান ভবনটিও হুমকিতে পড়েছে।  

ভাঙন প্রতিরোধে নদীপাড়ে পাকা বাঁধ নির্মাণ বা বিদ্যালয়টি অন্যত্র স্থানান্তরের দাবি জানান শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চলেছে নদীপাড়ের ভাঙন। তবুও ভাঙনরোধে প্রশাসন বা কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই। এতে হুমকিতে পড়েছে বিদ্যালয়টি, কৃষিজমি, ঘরবাড়িসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। ভাঙনের কারণে বিদ্যালয়টিতে দিনে দিনে কমছে শিক্ষার্থীর ভর্তি ও উপস্থিতি।

এবিষয়ে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মমতাজ পারভীন বলেন, বিদ্যালয়টি তিনি তদারকি করেন। নদী ভাঙতে ভাঙতে বিদ্যালয়ের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভাঙন রোধে এবং বিদ্যালয়টি নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করার জন্য বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তাদের চিঠি দিয়ে আসছেন।

জানা গেছে, পদ্মানদীর কোলঘেঁষে ১৯৬৬ সালে প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর ১৩ নম্বর চর ঘোষপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এটি চর সাদিপুর ইউনিয়নের প্রথম বিদ্যালয়। প্রায় ২০ বছর ধরে নদীপাড়ের প্রায় তিন কিলোমিটার অংশ ভেঙে গেছে। বর্ষা মৌসুমে বিদ্যালয়ের চারিদিকে থৈ-থৈ পানি থাকে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এতে আতঙ্কে গত ১০ বছর ধরে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির হারও কমেছে। আবার ভর্তি হলেও উপস্থিতি কম। একসময় বিদ্যালয়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে রয়েছে মাত্র ১১৬ জন।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী হুমাইরা মিম বলে, খেলার মাঠ খুবই ছোট। অনেক সময় খেলার সামগ্রী ও শিক্ষার্থীরা নদীতে পড়ে যায়। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।

আরেক ছাত্র নাইম হোসেন বলেন, পানিতে ডুবে যাওয়া ও ভেঙে পড়ার আতঙ্কে অনেকেই বিদ্যালয়ে আসেনা। ভর্তিও হতে চায়না। ভাঙনরোধে তারা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাই।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের পুরাতন একটি ভবন নদীগর্ভে চলে গেছে। বর্তমান ভবনটিও নদীর কাছাকাছি। খেলার মাঠ নেই। এসব কারণে বিদ্যালয়টি ধ্বংসের পথে। কমেছে শিক্ষার্থীর ভর্তি ও উপস্থিতি।

চর সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মেছের আলী খাঁ জানান, নদীর কারণে তার ইউনিয়নের মানুষের দুঃখ দুর্দশার শেষ নেই। ঘোষপুর বাজার এলাকায় জায়গা আছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল জানান, নদীর কারণে চর সাদিপুর একটি প্রত্যন্ত এলাকায় পরিণত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।