ঢাকা: নারীদের চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে অর্থ আত্মসাৎ ও স্বর্ণালংকার লুট করার অভিযোগে মো. মাসুদ রানা ওরফে সাকিব খাঁন (৩৯) নামে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।  

এক নারী ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) পিবিআই সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আবু ইউসুফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি জানান, মাসুদ রানা ওরফে সাকিব খাঁন স্টারমেকার অ্যাপসে নিজেকে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পরিচয়ে গান পরিবেশন করেন। স্টারমেকার অ্যাপসে তার গানের কমেন্টস বক্সে ওই নারী ভুক্তভোগী কমেন্ট করেন। এ কমেন্টের সূত্র ধরে দুইজনের মধ্যে আলাপ আলোচনা শুরু হয়। সাকিব নিজেকে আর্মি অফিসার দাবি করে ওই নারীকে জানায় তার বাড়ি রাজশাহীতে। পরে তাদের দুইজনের মধ্যে অনলাইনে বন্ধুত্ব হয়। ভুক্তভোগী নারী সরকারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। তবে প্রতারক মাসুদ তাকে আরও ভালো চাকরির প্রলোভন দেখায়। মাসুদের প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে ওই নারী তাকে ২ লাখ টাকা দেয়।

তিনি আরও জানান, তবে সাকিব খাঁন তাকে চাকরি না দিয়ে আরও টাকা দাবি করলে ভুক্তভোগী নারী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হচ্ছেন। তখন তিনি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বলেন। এতে প্রতারক রাজি হয়ে ভুক্তভোগীকে বলেন ৭ জুলাই যশোরের চাঁচড়া মোড়ের মধুমতি হোটেলে আসতে। কথা মতো ভুক্তভোগী ওই নারী নির্ধারিত স্থানে যান। তখন  ভুক্তভোগীকে এক গ্লাস জুস খেতে দেয়। জুস খাওয়ার পর ভুক্তভোগী সাকিবের কথামতো ১টি স্বর্ণের চেইন, ১ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ১টি স্বর্ণের আংটি  ও ১টি স্যামসাং মোবাইল তার হাতে তুলে দেন। সাকিব তখন ভুক্তভোগীর সামনে থেকে তার এসব স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোনটি নিয়ে চলে যায়। এরপর এসব বিষয়ে গত ১৫ জুলাই পিবিআই যশোর জেলা ইউনিটে ভুক্তভোগী এ বিষয়ে একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের পর পিবিআই এ বিষয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে।

কে এই সাকিব খাঁন?

পিবিআই তদন্ত জানতে পারে, প্রতারক মাসুদ ওরফে সাকিব খাঁন পেশায় একজন কৃষক। সে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে।  সে পেশায় কৃষক হলেও মূলত স্টারমেকার অ্যাপসে আর্মি ক্যাপ্টেন পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে। পরবর্তীতে ভালো চাকরির  প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকর নিয়ে নেয়। আগেও সে একাধিক মেয়ের সঙ্গে এমন প্রতারণা করে।

পিবিআই'র মুখপাত্র বলেন, তদন্তের একপর্যায়ে পিবিআই যশোর জেলা ইউনিটের একটি দল গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর)  পাবনার ভাঙ্গুরা থানাধীন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাসুদ ওরফে সাকিব খাঁনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ভুক্তভোগী নারীর মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়। এছাড়া তার দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ভুক্তভোগী নারীর স্বর্ণালংকার রোববার (৩ সেপ্টেম্বর)  খুলনা থেকে জব্দ করা হয়।  পরে রোববার ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে সাকিব খাঁনের বিরুদ্ধে  যশোরের কোতোয়ালি একটি মামলা করেন। এছাড়া একই দিনে মাসুদকে আদালতে তুললে সে ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩
এসজেএ/জেএইচ