ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে স্ত্রীর মরদেহ রাস্তায় ফেলে পালালেন স্বামী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
ফরিদপুরে স্ত্রীর মরদেহ রাস্তায় ফেলে পালালেন স্বামী

ফরিদপুর: ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় রুমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ রাস্তায় ফেলে স্বামীর পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার।

শনিবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল দক্ষিণ দিঘিরপাড় এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে রোববার (২৭ আগস্ট) ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নিহত রুমা বেগম উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের পাতরাইল দিঘিরপাড় গ্রামের মো: টোকন মাতুব্বরের স্ত্রী ও মাদারীপুরের রাজৈর উত্তর চাঁনপুট্টি গ্রামের প্রয়াত কুদ্দুস মাতুব্বরের মেয়ে।  

নিহত রুমার পরিবারের সদস্যরা জানান, শনিবার সকালে রুমার স্বামী টোকন মাতুব্বরের এক ভাগনে হৃদয় মিয়ার মোবাইল থেকে তাদের জানানো হয় রুমা আত্মহত্যা করেছে। তার মরদেহ এসে নিয়ে যান। এরপর রুমার স্বামী টোকনকে মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও সে ফোন রিসিভ করেনি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার আব্দুল্লাহবাদ বাড্ডায় রুমার ভাড়া বাসায় খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু, সেখানেও রুমা ও তার স্বামী-সন্তানদের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না তারা।  

এক পর্যায়ে, দুপুরের পর অপরিচিত একটি ফোন থেকে রুমার মামা বাবুলকে জানানো হয় রুমার মরদেহ এখন ভাঙ্গায় আছে। তাকে রাস্তার উপরে রাখা হয়েছে, সেখানে গিয়ে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যান। তারপর ভাঙ্গায় রুমার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয় তারা। এসময় পথে দেখেন একটি ব্রিজের ওপর স্টিলের খাটে চাদর দিয়ে ঢাকা রয়েছে রুমার মরদেহ। সেখানে রুমার ,মরদেহটি একাই পড়েছিল।  

পরে রুমার শ্বশুরবাড়িতে যান তারা। কিন্তু, বাড়িতেও তারা কাউকে খুঁজে পায়নি। এরপর থানা পুলিশকে জানানোর পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সন্ধ্যায় মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

রুমার মা ও ছোট বোন জানায়, রুমা তার স্বামী ও তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে ঢাকার বাড্ডায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে গত এক বছর আগে টোকন কাউকে না জানিয়ে আরেকটি বিয়ে করে। পরে কিছুদিন পর তাকে ডিভোর্স দেয় টোকন। কিন্তু, সম্প্রতি সেই বিয়ে করা মেয়ের সঙ্গে টোকনের গোপনে যোগাযোগ চলছিল। এই নিয়ে রুমার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো এবং টাকা-পয়সা চেয়েও রুমাকে নির্যাতন করতো টোকন।  

রুমার মামা বাবুল হোসেন জানায়, তার ভাগ্নির বাম হাত ও পা ভাঙ্গা ছিল। মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে পরিকল্পিত ও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত একটি সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা।  

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তিনিসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে সন্ধ্যার পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২৩
এসএম/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।