ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, সন্ধ্যা হলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২৩
বিদ্যুৎ বিল বকেয়া, সন্ধ্যা হলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ

ফরিদপুর: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ের ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ (ভাঙ্গার মোড়) এলাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া। দেড় মাস ধরে ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়ক নামে পরিচিত এ এলাকাটিতে বিদ্যুৎ নেই।

তাই সন্ধ্যা হতে হতেই ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে পুরো এলাকায়। রাতের পরিস্থিতি ভিন্ন। মনে হয় যেন দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বারটি ভূতুড়ে।

ভাঙ্গা ওজোপাডিকো কর্তৃপক্ষ বলছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের (মুন্সীগঞ্জ) কাছে ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ এলাকার বিদ্যুৎ বিলের ৩১ লাখ টাকা বকেয়া। বিল পরিশোধ হয় না, তাই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন।

এ ব্যাপারে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ দাবি করে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) ভাঙ্গা আবাসিক প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, সংশ্লিষ্ট দপ্তর সময়মতো বকেয়া পরিশোধ না করায় গত ৬ জুন ইন্টারচেঞ্জ এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ওই এলাকা ও সড়কে বাতি বন্ধ থাকায় সেখানকার কোনো দুর্ঘটনার দায় ওজোপাডিকো নেবে না।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) (শ্রীনগর-মুন্সীগঞ্জ) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ইন্টারচেঞ্জের বিদ্যুতের মিটার চুরি হয়ে যাওয়ায় কিছুদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া আছে কিন্তু পরিশোধের জন্য আমাদের কাছে ফান্ড নেই।

জানা গেছে, সন্ধ্যার পর ঘুটঘুটে অন্ধকার নামতেই ইন্টারচেঞ্জ এলাকায় চুরি-ডাকাতি ও ছিনতাই শুরু হয়। রাতের দিকে এর পরিমাণ আরও বাড়ে। বেশ কিছু দিন ধরে এসব ঘটনা খুব বেড়েছে। যে কারণে ওই এলাকার স্থানীয় ও অন্যান্য যাতায়াতকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ভাঙ্গা কোর্ট পাড়ের বাসিন্দা রাহাত হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, এক মাস ধরে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার এলাকাটি ভূতুড়ে হয়ে পড়ে সন্ধ্যার শুরু থেকেই। পুরো এলাকা অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে। কোনো বাতির আলো জ্বলে না।

স্থানীয় ও প্রান্তিক পণ্য বিক্রেতারা জানান, তাদের আগের মতো বেচা-বিক্রি নেই। চুরি-ছিনতাইয়ের কারণে তাদের আয় রোজগার তেমন হয়। সন্ধ্যার পর পুরো এলাকাটি অন্ধকার হয়ে যায়। ডাকাতির ভয়ে লোকেরা এ পথ সহজে মাড়ায় না।

স্থানীয় শামিম মাতুব্বরসহ কয়েকজন জানান, গোলচত্বর এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় বিভিন্নস্থানের যাত্রীসহ নানাজন মলম পার্টির খপ্পরেও পড়েছেন। পুলিশ টহল দিলেও চুরি-ছিনতাই কমছে না।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম বলেন, ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ এলাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সচল থাকা খুবই জরুরি। ঈদের আগে ও পরে ছোটখাটো ঘটনা ছাড়া বড় অপরাধের ঘটনা ঘটেনি। এ এলাকায় পুলিশের তৎপরতা রয়েছে বলে দাবি তার।

ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুৎ বিলের বড় একটি অ্যামাউন্ট বকেয়া পড়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি ফরিদপুর জেলা সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করতে বলেছেন তিনি। আশা করছি, তা-ই হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২৩
এসএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।