ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ডিবি সোর্স থেকে ডাকাত দলের প্রধান শহিদ মাঝি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
ডিবি সোর্স থেকে ডাকাত দলের প্রধান শহিদ মাঝি

ঢাকা: এক সময় ডিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতেন শহিদুল ইসলাম মাঝি ওরফে শহিদ মাঝি। ২০১২ সালে নিজেই একটি ডাকাত দল গড়ে তোলেন।

এরপর প্রায় একযুগ ধরে শহিদ মাঝি ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করে আসছিলেন। এ পর্যন্ত ডাকাতির ঘটনায় ৭টি মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি ডাকাতির মামলায় শহিদ মাঝিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। অভিযানে ডাকাত শহিদ মাঝির দলের মোট ৭ জন ও অপর একটি ডাকাত দলের আরো ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে দুই দলের সদস্যরাই একে অপরের পরিচিত।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সোমবার (১০ জুলাই) গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও ঢাকা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।  

গ্রেপ্তাররা হলেন- দলনেতা শহিদ মাঝি, শ্রী সাগর চন্দ্র মালি, শাহ আলম হাওলাদার, মো. কামরুল ইসলাম ওরফে রমিজ তালুকদার, মো. মাকসুদুল মোমিন ওরফে শামীম, মো. হাসান, মো. নুরুল ইসলাম, মো. খলিলুর রহমান, মো. আকরাম হোসেন, মো. দ্বীন ইসলাম ওরফে কাউছার আহম্মেদ, মো. ইলিয়াছ আহম্মেদ ওরফে নীরব, মো. ফরহাদ আলী, মো. রিয়াজ হোসেন হাওলাদার ওরফে রিয়াজুল, মো. শফিকুল ইসলাম লিটন, মো. সেরাজুল ইসলাম ও মো. জহিরুল ইসলাম পিন্টু। তাদের কাছ থেকে ৩০ টি মোবাইল ফোন, ১টি মাইক্রোবাস, ডিবি জ্যাকেট, হ্যান্ডকাফ ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

ডিবি প্রধান বলেন, শহিদ মাঝি এক সময় ডিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। ২০১২ সালে তিনি অন্যদের বুঝিয়ে ডাকাতদল তৈরি করেন। তার দলে ১০ জন সদস্য রয়েছেন। আমরা ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের নাম পরিচয় পেয়েছি, তাদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থানার একটি মামলার তদন্তে শহিদ মাঝি ও তার দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার করি। এই মামলার তদন্তকালে ৩০০ ফিটের অস্ট্রেলিয়ান স্কুলের সামনে থেকে আরেকটি গ্রুপের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডিবি জানায়, গত ১৭ জুন আব্দুল আজিজ পল্টন থেকে ১৩ লাখ টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলে খিলক্ষেতের বাসার যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা ৮টার দিকে জিয়া কলোনি এমপি চেকপোস্টের সামনে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন ব্যক্তি মাইক্রোবাসের মাধ্যমে তার ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এরপর ডিবির পোশাক পরা অবস্থায় এবং ডিবি পরিচয়ে আজিজকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এর পর তার হাত, পা ও চোখ বেঁধে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্যাগে থাকা ১৩ লাখ টাকা, মানিব্যাগে থাকা ১৯ হাজার টাকা, ৩টি মোবাইল ফোন এবং তার বিকাশে এজেন্ট নাম্বার পিন কোড জেনে ৩৭ হাজার টাকা তুলে নিয়ে নেয়। পরে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাফেরা করে রাত ১০ টার দিকে রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভার অন্তর্গত চরপাড়া সাকিনস্থ রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গায় ফেলে যায়। এ ঘটনায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন আজিজ।

ডিবি গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম ঘটনা তদন্ত করে ডাকাত দলটিকে শনাক্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তার করেন।

ডিবি জানিয়েছে, ডিবি পরিচয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা তারা পারস্পরিক যোগসাজশে মানি এক্সচেঞ্জ ও ব্যাংক এলাকায় বিশেষ করে মতিঝিল, পল্টন, ধানমন্ডি ও গুলশান থেকে কোনো ব্যক্তি টাকা নিয়ে বের হওয়ার সময় তাদের টার্গেটকে ফলো করেন। ২-৩ জন মোটর সাইকেল নিয়ে টার্গেটের পিছু নেন। পথে সুবিধাজনক স্থানে মাইক্রোবাস নিয়ে তাদের অগ্রগামী টিম প্রস্তুত থাকেন। মোটরসাইকেল টিমের তথ্যমতে সুবিধাজনক জায়গায় মাইক্রোবাস এসে টার্গেটকে গতিরোধ করে ভিকটিমকে মাইক্রোবাসে তুলে নেন এবং ভিকটিমের কাছ থেকে সর্বস্ব লুটিয়ে নিয়ে নির্জন স্থানে ফেলে যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৩
এসজেএ/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।