ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নাদিম হত্যা: চেয়ারম্যান বাবুকে আ.লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৬ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৩
নাদিম হত্যা: চেয়ারম্যান বাবুকে আ.লীগ থেকে সাময়িক বহিষ্কার মাহমুদুল আলম বাবু

জামালপুর থেকে: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের জামালপুর ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেওয়া বকশীগঞ্জ সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।  

মাহমুদুল আলম বাবু একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন।

শুক্রবার (১৬ জুন) বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন তালুকদার বাবুল স্বাক্ষরিত চিঠিতে সাময়িক বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  

চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১৪ জুন বকশীগঞ্জ পৌর শহরের পাটহাটি মোড় এলাকায় বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের ওপর একদল দুষ্কৃতিকারী অতর্কিত হামলা করে। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, গত ১৫ জুন বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৪৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।  

চেয়ারম্যান বাবু'র উদ্দেশ্যে চিঠিতে লেখা হয়েছে,

'উক্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনায় প্রশাসন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে আপনার সংশ্লিষ্টতা জোড়ালোভাবে উল্লেখিত হওয়ায় দলীয় ভাবমূর্তি প্রচণ্ডভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। ইতোপূর্বেও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আপনার অসাংগঠনিক কার্যক্রম এবং অসদাচরণ প্রকাশ পাওয়ায় আপনাকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আওয়ামী লীগ, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন শাখা'র সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো এবং সংগঠন থেকে সামরিক বহিষ্কার করা হলো।  

চিঠিতে আরও বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আপনাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না এই মর্মে চিঠি পাওয়ার সাত কর্ম দিবসের মধ্যে আওয়ামী লীগ, বকশীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের বরাবর জবাব দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হলো।

প্রসঙ্গত, বাংলানিউজের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে, গত ১৪ জুন চেয়ারম্যান বাবু'র নেতৃত্ব তার ছেলে ফাহিম ফয়সাল সাংবাদিক নাদিমের মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করলে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ১৫ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

হত্যাকাণ্ডে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেও উঠে এসেছে চেয়ারম্যান বাবু ও তার ছেলে ফাহিম ফয়সালের সম্পৃক্ততা।  

জামালপুরের পুলিশ সুপার নাসির উদ্দীন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেছেন, মাহমুদুল বাবুর ছেলে ইট দিয়ে যেভাবে মাথা থেতলে দিয়েছে সাংবাদিক নাদিমের, যেটা রক্তাক্ত জখম হয়নি কিন্তু ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে তা থেকে তো অবশ্যই বোঝা যায় হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করা হয়েছে।  

এসপি আরও বলেন, প্রথম থেকে বাবুর নাম আমি বলেছি, তিনি প্ল্যানমেকার। প্রত্যেকটা জায়গায় বলেছি। আরও মাস্টারমাইন্ড আছে তারাও বের হয়ে আসবে।

বুধবার (১৪ জুন) রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত সাংবাদিক নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ৩টার দিকে তিনি মারা যান।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৪ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৩

এনবি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।