ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

মহিউদ্দিন মাহমুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
কাতারের আমিরের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

দোহা (কাতার) থেকে: কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৪ মে) কাতারের ‘আমিরি দেওয়ানে’ এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে জ্বালানি, বিনিয়োগ, কাতারে বাংলাদেশি জনশক্তি, মুসলিম উম্মাহর বিভিন্ন সমস্যা, উন্নয়ন, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।  

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খুবই উষ্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে এ বৈঠকটি হয়।

বৈঠকে জ্বালানি বিষয়ে কাতারের আমির বলেন, বাংলাদেশে অধিকতর জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে নতুন একটি চুক্তি সইয়ের আলোচনা চলছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন বন্ধু দেশ হিসেবে কাতার বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, কাতারের আমিরের প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন। শিগগিরই নতুন চুক্তি সই হতে পারে।

২০১৭ সালের ১৫ বছর মেয়াদি একটি চুক্তির আওতায় বর্তমানে বাংলাদেশ কাতার থেকে ১ দশমিক ৮ থেকে ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন জ্বালানি আমদানি করছে। কিন্তু বাংলাদেশ কাতার থেকে আরও বেশি এলএনজি চাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে কাতারের আমির বলেন, তারা এক সময় জানতো বাংলাদেশ দুর্যোগ এবং দারিদ্র পীড়িত দেশ। কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর তিনি বাংলাদেশের খাদ্য সংকট দূর করেছেন।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে তার সরকার দারিদ্র মানুষের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন এবং অতি দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে।

তিনি বলেন, তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য মুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়া।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি লাভ করেছি। কিন্তু আমার কাজ শেষ হয়নি। আমি আরও কাজ করতে চাই। কিন্তু আমি একা পারবো না। আমার আপনার সহযোগিতা প্রয়োজন। আমাদের আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত। পারস্পরিক লাভে আপনারা বিনিয়োগ নিয়ে আসতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে এ বছর বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

জবাবে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেন, অবশ্যই তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন।

মুসলিম উম্মাহ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে মুসলিম দেশগুলো ছোটখাটো বিষয়ে সংঘাতে জড়ায়, এটি মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের পথে বাধা।

শেখ হাসিনা বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য কাজ করতে কাতারের আমিরকে অনুরোধ করেন।

জবাবে কাতারের আমির বলেন, তিনি হয়তো মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন না। তবে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং অগ্রগতির জন্য তিনি কাজ করে যাবেন।

কাতারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিষয়ে কাতারের আমির বলেন, বর্তমানে কাতারে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার জনশক্তি আছে, তারা কাতারের জন্য আর্শিবাদ। কাতার নতুন নতুন প্রকল্প নিতে যাচ্ছে যেখানে বাংলাদেশিরা কাজ করতে পারবেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতার ফাউন্ডেশনের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের স্কুল ‘আওসাজ একাডেমি’ পরিদর্শন করেন। এ স্কুলটিতে ৩ থেকে ২৫ বছর বয়সী ৫০০ শিক্ষার্থী এবং ১৮৫ জন শিক্ষক রয়েছেন।

শেখ হাসিনা এ একাডেমির কয়েকটি ক্লাস রুম পরিদর্শন করেন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ স্কুলের শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি উপহার দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীও বাংলাদেশের অটিস্টিক শিশুদের আঁকা চারটি ছবি উপহার দেন।

বাংলাদেশে এ ধরনের স্কুল প্রতিষ্ঠা ও শুরুতে শিশুদের অটিজম শনাক্ত করা এবং বাংলাদেশি অটিজম স্কুলের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে কাতারের কাছ থেকে সহায়তা চান।

এ স্কুল কর্তৃপক্ষ ও কাতার ফাউন্ডেশন এ ধরনের সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
এমইউএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।