ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুলাদীতে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ভাই নিহত, আরেক ভাই নিখোঁজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৩
মুলাদীতে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ভাই নিহত, আরেক ভাই নিখোঁজ

বরিশাল: বরিশালের মুলাদীতে প্রতিপক্ষ গ্রুপের হামলায় এক ভাই নিহত ও আরেক ভাই নিঁখোজ রয়েছেন বলে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসী জানিয়েছেন।
তবে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত পৌনে ১টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা গিয়ে পৌঁছাতে পারেনি বলে জানিয়েছেন মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তুষার কুমার মন্ডল।

এরআগে সোমবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছবিপুর ও বাটামারা ইউনিয়নের সীমানার চাকলা বাজার এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহত হেলাল বেপারী (৪০) উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড পূর্ব তয়কা গ্রামের বাসিন্দা সেলিম বেপারী ছেলে। নিখোঁজ রয়েছে হেলালের ভাই কামাল বেপারী বলে জানিয়েছেন বাটামারা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন অশ্রু।

তিনি বলেন, হাজী ও আকন গ্রুপের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিনের। আগের কি নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত তা বলতে পারবো না। তবে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ছবিপুর ও বাটামারা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী পূর্ব তয়কা বা চাকলা বাজার এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে হেলাল বেপারী নিহত হয়েছে ও কামাল বেপারী নিখোঁজ রয়েছে।

গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মাহিমা বেগমের স্বামী আলী হোসেন জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ৭/৮ বছর পূর্বে হাজী গ্রুপ ও আকন গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে হাজী গ্রুপের আনিস নামে একজন নিহত হয়। এরপর থেকে এলাকায় আসতে পারেনি হাজী গ্রুপের ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য আলম বেপারীসহ লোকজন।

আলীর অভিযোগ, আলম বেপারী এলাকায় আসার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগোযাগ করে। এরপর তারা ৩০/৩৫ জন দুটি ট্রলারে করে বাজারে আসে। তখন পুলিশ সদস্যরা সেখানে ছিল। পরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো শুরু করে। এ সময় আকন গ্রুপের সদস্য হেলালকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে।  আর কামাল নিখোঁজ রয়েছে।

আলী আরও অভিযোগ করেন, তার বাড়ির সামনেও বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এ সময় তার স্ত্রী সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মাহিমা বেগম প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করা হয়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মজিবুর রহমান সরদার জানান, আধিপত্য নিয়ে স্থানীয় কবিরাজ, আকন, হাওলাদার ও হাজী গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।  তবে এ চারটি গ্রুপ আবার দুটি গ্রুপে বিভক্ত।

তিনি জানান, দাদন হাওলাদারের ভাই আনিছ হাওলাদার কয়েক বছর আগে খুন হন। যে ঘটনায় মামলা দায়েরের পর দীর্ঘ বছর এলাকা ছাড়া ছিলো হেলাল বেপারী ও কামাল বেপারী। ১০-১৫ দিন আগে তারা নিজ এলাকায় আসে। আর সোমবার সকালে দাদন হাওলাদারের পক্ষে কিছু লোক হেলমেট পড়ে ঢাকা থেকে লঞ্চ যোগে গৌরনদীর টরকি হয়ে এলাকায় আসে।  শুনেছি এলাকায় আসার আগে পুলিশের সহায়তাও চেয়েছিলো তারা। আর এলাকায় আসার পরেই উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছিলো।

তিনি বলেন, ঘটনার সময় বোমা ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। পরে জানতে
পারি হেলাল বেপারী খুন হয়েছে এবং কামাল বেপারী নিঁখোজ রয়েছে। এরা দুজন
আপন ভাই।

এ বিষয়ে রাত পৌনে ১টায় মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, এখনও পৌঁছাইনি।  বিস্তারিত এখন কিছুই বলতে পারবো না।  শুনেছি একজন নিহত ও একজন নিখোঁজ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশালের পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এরই মধ্যে ডিবি ও পুলিশের বড় একটি দল ঘটনাস্থলের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছেন, ঘটনার সূত্রপাতের সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পেরে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে রাতে আবার তারা সেখানে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৩
এমএস/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।