ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
প্রবাসীর স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মৌসুমী খাতুন (২৯) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে স্বজনদের দাবি, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সদকী ইউনিয়নের সদকী রায়পাড়া এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

পরে সুরতহাল প্রতিবেদন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

মৃত মৌসুমী খাতুন ওই এলাকার কাতার প্রবাসী মো. মাসুদ হোসেনের (৩২) স্ত্রী এবং দুই সন্তানের জননী।

তবে গৃহবধূর বাবা বাড়ির লোকদের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়িসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মৌসুমীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। হত্যার পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১১ বছর আগে উপজেলার নন্দনালপুর ইউনিয়নের চড়াইকোল এলাকার মো. ইউনুছ আলীর মেয়ে মৌসুমীর সঙ্গে সদকী ইউনিয়নের রায়পাড়া এলাকার মো. আনার প্রামাণিকের ছেলে মাসুদ হোসেনের বিয়ে হয়। এরপর থেকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের টাকা দাবি করে আসছিল। মেয়ের সুখের জন্য ইউনুছ আলী কয়েকবার নগদ টাকা ও নানাবিধ আসবাবপত্র দেন। মৌসুমী ও মাসুদের সংসারে মেয়ে মাছুরা (১০) ও ছেলে মুছা (৮) নামের দুটি সন্তান রয়েছে।

আরও জানা গেছে, প্রায় ৬ মাস আগে মাসুদ হোসেন জীবিকার জন্য কাতারে যান। বিদেশ যাওয়ার পর থেকেই মাসুদ ও তার পরিবাররের লোকজন পুনরায় যৌতুক দাবি করে। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কয়েকবার সালিশ হয়।  

মৌসুমীর বাবা মো. ইউনুছ আলী অভিযোগ করে বলেন, মেয়ের সুখের জন্য ইতোপূর্বে কয়েকবার নগদ টাকা ও আসবাপত্র দিয়েছি। কিন্তু জামাই বিদেশে যাওয়ার পর পুনরায় যৌতুকের টাকা দাবি করে তারা। এ নিয়ে কয়েকবার সালিশ হয়েছে। হঠাৎ বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ভোররাতে জানতে পারি, আমার মেয়ে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে।  

ইউনুছ আলীর দাবি, যৌতুকের টাকা না পেয়ে মেয়ের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনই তার মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। হত্যার পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার পায়তারা করছেন অভিযুক্তরা। তিনি থানায় মামলা করবেন বলেও জানান।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শাশুড়ি জহুরা খাতুন বলেন, বুধবার (৫ এপ্রিল) দিনগত রাতে ছেলে ও তার বউয়ের ঝগড়া হয়। এতে রাগে-ক্ষোভে ছেলেবউ গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার দাবি, মৌসুমীকে কেউ মারেনি। তিনি নিজেই আত্মহত্যা করেছেন।

তবে ঘটনার পর থেকেই মৃতের শ্বশুর, ভাসুর, ভাসুরের স্ত্রী ও ননদ পলাতক।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কামরুজ্জামান বলেন, মরদেহ স্থানীয়রা আগেই নামিয়ে ফেলে। আমরা খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেই। গৃহবধূর গলায় দাগ রয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।