ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বঙ্গবাজারের আগুন: পোড়া স্তূপে ভালো কাপড় খুঁজছেন ছিন্নমূলরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৩
বঙ্গবাজারের আগুন: পোড়া স্তূপে ভালো কাপড় খুঁজছেন ছিন্নমূলরা

ঢাকা: সারাদিন জমজমাট থাকা বঙ্গবাজার এখন পোড়া স্তূপ। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে গেছে সাতটি মার্কেট।

কিছু মালামাল ব্যবসায়ীরা বের করতে পারলেও পুড়ে গেছে বেশিরভাগ। রাস্তার ওপর পড়ে থাকা সেসব পোড়া স্তূপেই ভালো কাপড় খুঁজে বেড়াচ্ছেন ছিন্নমূল কয়েকশ' মানুষ।  

বুধবার (৫ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বঙ্গ ইসলামীয়া মার্কেট ও বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্সের সামনে রাস্তায় পড়ে আছে পোড়া জামাকাপড়। পানিতে ভেজা সেসব জামাকাপড়ের মধ্যে রয়েছে কিছু ভালো পোশাকও। সেগুলোই খুঁজে বেড়াচ্ছেন ছিন্নমূলরা।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব পোড়া জামাকাপড় কেউ পরবেন, কেউবা বিক্রি করবেন। আবার কেউ ঘরের দরজা জানালার পর্দা তৈরির কাপড় সংগ্রহ করছেন।

পুরান ঢাকার আগামসি লাইন থেকে আসা সালমা আক্তার বলেন, পোড়া জামাকাপড় থেকে ভালো কাপড় খুঁজছি। এগুলো দিয়ে ঘরের পর্দা বানাবো।

গোলাপশাহ মাজারে থাকেন ছিন্নমূল সানি। তিনি বলেন, পোড়া জামাকাপড়ের মধ্যে কিছু ভালো আছে। সেগুলো ধুয়ে নিলে পরা যাবে। তাই খুঁজছি।

পুরান ঢাকার আলো বাজারে একটি হোটেলে কাজ করেন মোশাররফ। তিনি বলেন, হোটেলে আমরা অনেকে কাজ করি। পোড়া কাপড়ের মধ্যে যেগুলো ভালো আছে, সেগুলো পরা যাবে।

মরিয়ম বেগম নামের আরেক ছিন্নমূল নারী বলেন, আমাদের তো কাপড়-জামা কেনার সামর্থ্য নেই। তাই এখান থেকে খুঁজে নিচ্ছি। কাপড়গুলো নোংরা, পোড়া হলেও পরা যাবে।

এদিকে বঙ্গবাজারে লাগা আগুন প্রায় নিভে এলেও এখনো এনেক্সকো টাওয়ারে আগুন থাকার আশঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিস। তারা এনেক্সকো টাওয়ারসহ পুরো এলাকায় ডাম্পিং ডাউনের (সম্পূর্ণ নির্বাপন) কাজ করছেন।

সকাল ১০টায় এনেক্সকো টাওয়ারের পঞ্চম তলায় পানি ছিটাতে দেখা যায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। পাশাপাশি ওই মার্কেটের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলা থেকে ব্যাপক ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।

সকাল সাড়ে ৮টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ঢাকা জোনের উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, তারা এখন ডাম্পিং ডাউনের কাজ করছেন। এখন আর খোলা জায়গায় আগুন নেই। তবে এনেক্সকো টাওয়ারের ৫-৭তলায় কিছুটা আগুন থেকে যেতে পারে। সেটি তারা নির্বাপন করছেন।

অন্যদিকে এনেক্সকো টাওয়ার থেকে এখন বেঁচে যাওয়া মালামাল সরানোর কাজ করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা তাদের দোকানে রয়ে যাওয়া মালামাল বস্তায় করে মার্কেট থেকে নিচে ফেলছেন। নিচ থেকে ভ্যান ও পিকআপে করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সকাল ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ৪১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। এরপর ৪৩টি ইউনিট যাওয়ার খবর জানায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ৪৮টি ইউনিটের প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টায় বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর প্রায় ২৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো আগুন পুরোপুরি নেভার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি ফায়ার সার্ভিস।

আগুনে বঙ্গবাজার এলাকার মোট সাতটি মার্কেট পুড়ে গেছে। এর মধ্যে চারটি পুরোপুরি ও তিনটি আংশিক। মার্কেটগুলো হলো- বঙ্গ ইসলামীয়া মার্কেট, বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্স, বঙ্গবাজার মার্কেট, এনেক্সকো টাওয়ার, মহানগর শপিং কম্প্লেক্স, আদর্শ মার্কেট, গুলিস্তান মার্কেট।

বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৪৭ ইউনিট
আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছে বিমানবাহিনী

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৩
এসসি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।