ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন বসানোর কাজ শেষ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন বসানোর কাজ শেষ

শরীয়তপুর: পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে।
 
বুধবার (২৯ মার্চ) রাত ৯টার দিকে পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী (অফিস ম্যানেজার) মো. সাদমান শাহরিয়ার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

এর আগে বুধবার বিকেল সোয়া ৫টার দিকে পদ্মা সেতুর মধ্যেভাগ প্রান্তে কাজ শুরু হয়ে বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে শেষ হয়। রেললাইনের ৭ মিটার কংক্রিট ঢালাই করার মধ্য দিয়ে নির্মাণ কাজ শেষ হয়।  

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে অসম্পূর্ণ (বাকি) থাকা ৭ মিটার কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ  বিকেলে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে আমরা সেতুর ওপরের রেল লাইনের কাজ শেষ করেছি। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় রেল লিংক প্রকল্পের অধীনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। এই ১৬৯ কিলোমিটার রেল লাইনের মধ্যে পদ্মা সেতুতে রেল লাইন স্থাপন করা হয়েছে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। সেতুতে রেলপথের একটি স্লিপার বসানো বাকি ছিল। ওই স্লিপারটি মঙ্গলবার চায়না থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছায়। এরপর সন্ধ্যায় তা প্রকল্প এলাকায় আনা হলে, রাতেই ওই স্লিপারটি সেতুর রেলপথে বসানো হয়। সেতুতে তা বসানোর পর অসম্পূর্ণ থাকা বাকি ৭ মিটার কংক্রিটের ঢালাই আজ শেষ হয়।  

এ সময় রেল লিংক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেনের উপস্থিতিতে ৭ মিটারের ঢালাইয়ের মধ্যে দিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা পদ্মা সেতুতে রেল লাইন বসানোর কাজের সমাপ্ত ঘোষণা করে। রেলমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সেতুতে ৪ এপ্রিল রেল চলবে বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী (অফিস ম্যানেজার) মো. সাদমান শাহরিয়ার বলেন, আমরা কাজটি সফলভাবে করতে পেরে খুবই আনন্দিত। আগামী ৪ এপ্রিল রেলমন্ত্রী প্রকল্প এলাকায় আসবেন বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সবকিছু ঠিক থাকলে ওই দিন ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মন্ত্রী মহোদয়কে নিয়ে মাওয়া স্টেশন পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার রেলপথে পরীক্ষামূলক রেল চালানো হবে।

পদ্মা সেতুর রেল লিংক প্রকল্পের পরিদর্শন প্রকৌশলী সঞ্জয় চন্দ্র রায় বলেন, পাথরবিহীন রেলপথ নির্মাণ করে আমরা বাংলাদেশের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলাম। সেতুর ওপর সফলভাবে রেললাইন নির্মাণ করতে পেরে আমরা গর্বিত। আগামী সপ্তাহে যাত্রীবাহী তিনটি বগি নিয়ে একটি রেলগাড়ি (টেস্টরেল) পরীক্ষামূলকভাবে সেতুতে চালানো হবে। তখন এ কাজের পরিপূর্ণতা পাব আমরা।

এদিকে পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় রেল লিংক প্রকল্পের অধীনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের ঠিকাদার চীনের চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (সিআরইসি)। পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পের কাজ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-ঢাকা থেকে মাওয়া, মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও ভাঙ্গা থেকে যশোর। পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের মাওয়া স্টেশন থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত দূরত্ব রেল পথে ৪২ কিলোমিটার। মাওয়া-ভাঙ্গা রেল পথের ৪২ কিলোমিটারের মধ্যে পদ্মা সেতুতে রেল লাইন স্থাপন করা হয়েছে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। সেতুতে রেলপথের একটি স্লিপার বসানো বাকি ছিল। ওই স্লিপারটি মঙ্গলবার চায়না থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছায়। এরপর সন্ধ্যায় তা প্রকল্প এলাকায় আনা হয়। রাতে ওই স্লিপারটি সেতুর রেলপথে বসানো হয়। সেতুতে তা বসানোর পর ৭ মিটার কংক্রিটের ঢালাই বাকি রাখা হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।