ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দিনাজপুরে পুলিশের টিআরসি নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, গ্রেফতার ১৭

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
দিনাজপুরে পুলিশের টিআরসি নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, গ্রেফতার ১৭

দিনাজপুর: পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ভুয়া পরীক্ষার্থী, প্রতারক ও প্রার্থীসহ ১৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।  

এসময় প্রতারণায় ব্যবহৃত টিআরসি নিয়োগ পরীক্ষার ছয়টি অ্যাডমিট কার্ড, ১০০ টাকা মূল্যমানের নয়টি ননজুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্প, বিভিন্ন ব্যাংকের চারটি ফাঁকা চেক, প্রতারক চক্রের ব্যবহৃত একটি হাইয়েস গাড়ি ও ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস বিফিংয়ে পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ এসব কথা জানান।

পুলিশ সুপার বলেন, সারাদেশের মতো দিনাজপুরেও নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ পরীক্ষা চলছে। এ পরীক্ষায় শহিদুল ইসলাম নামে এক ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়, যার প্রকৃত নাম তারেক রহমান। তার দেওয়া তথ্য মতে, দিনাজপুর শহরের কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে চার প্রতারক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের নামে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, নিয়োগ জালিয়াতি চক্রটি বিভিন্ন জেলায় তাদের এজেন্টদের মাধ্যমে শারীরিক যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের টার্গেট করে আবেদনের আগেই ছবি সংগ্রহ করত। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর প্রার্থীরা নিজেই শারীরিক পরীক্ষায় অংশ নিতেন। মাঠ পরীক্ষায় প্রার্থীরা উত্তীর্ণ হলে ভুয়া পরীক্ষার্থীরা তাদের লিখিত পরীক্ষা দিয়ে দিতেন। পরীক্ষায় পাস করলে তারা চুক্তি অনুযায়ী আর্থিক লেনদেন করতেন।
কিন্তু আমাদের চৌকশ পুলিশ ও ডিবি টিমের সদস্যরা আর্থিক লেনদেনের আগেই প্রতারক চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ধর্মপুর কৈকুড়ী এলাকার ফিরোজ আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (৩৮), নীলফামারী জেলার সদর উপজেলার বেড়াডাঙ্গা এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে মিশকাতুল ইসলাম (২৩), ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালান্দর কচুবাড়ী এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে রোকনুজ্জামান (৩০), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার হেলেঞ্চার সালটির হাট এলাকার ছেলে নাহিদ ইউসুফ (১৮), একই উপজেলার সালটিপাড়ার বাটুল সরকারের ছেলে শাহরিয়ার সরকার (১৮), রংপুরের সদর উপজেলার দক্ষিণ হরিদাদপুর এলাকার কারিমুল ইসলামের ছেলে মিস্টার রহমান (১৮), একই জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার দশভাই পাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে মোহাইমিনুল (১৮), কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার রামধন এলাকার মোকসেদ আলীর ছেলে মিজানুর রহমান (১৮), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ফুলচৌকি এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে রাজা মিয়া (১৮), ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিংপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে পজিরুল ইসলাম (৪৩), একই উপজেলার জগন্নাথপুর এলাকার মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে সাইফুল ইসলাম রিপন (৩৫) ও একই এলাকার মৃত আব্বাস আলীর ছেলে মোহসিন আলম (৩৫)।

প্রেস ব্রিফিংয়ে দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিন্নাহ আল-মামুন, কতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

দিনাজপুরে চলমান পুলিশের টিআরসি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রায় চার হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নেন। যা দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ। প্রাথমিক ও শারীরিক বাছাইয়ের পর এক হাজার ২৯ জন লিখিত পরীক্ষা দেন। এর মধ্যে ১৪৪ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।