ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তাবলিগে আত্মগোপনে ছিলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওয়াহেদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩
তাবলিগে আত্মগোপনে ছিলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওয়াহেদ

ঢাকা: রাজধানীর মুগদা থানাধীন মান্ডা এলাকায় ছেলের বাসায় দেখা করতে এসে গ্রেফতার হয়েছেন একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল ওয়াহেদ মণ্ডল (৭০)।

বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৩ এর একটি দল।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেনেন্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, তাবলিগ দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এতো বছর ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে আত্মগোপনে ছিলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই আসামি।   ছদ্মনামে তাবলিগ দলের সঙ্গে নিয়মিত স্থান পরিরিবর্তন করতেন ওয়াহেদ। পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যবহার করতেন অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিম।

তিনি জানান, গ্রেফতার ওয়াহেদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়। ১৯৭১ সালে গঠিত জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী আব্দুল ওয়াহেদ সংগঠনের গাইবান্ধা সদরের সদস্য সচিব ছিলেন।

তার বাবা আব্দুল জব্বারও একই মামলার মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। জব্বার গাইবান্ধা সদর এলাকার শান্তি কমিটি এবং সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীর প্রধান সংগঠক ছিলেন। পিতার যোগসাজসে আব্দুল ওয়াহেদ ও তার ভাই দুজনেই শান্তি কমিটির সক্রিয় সদস্য হিসেবে এলাকায় লুটপাট ও বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম চালায়।

র‌্যাব-৩ এর সিও আরও বলেন, ২০০৯ সালে গাইবান্ধা নিম্ন আদালতে আব্দুল ওয়াহেদসহ ৫ জনকে আসামি করে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে একটি মামলা দায়ের করেন আব্দুর রউফ। পরে ২০১৪ সালে মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে স্থানান্তর করা হয়। বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হলে আব্দুল ওয়াহেদসহ অন্যান্য আসামিরা ২০১৬ সাল পর্যন্ত জামিনে থাকে। ২০১৬ সালে জামিনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এবং পরবর্তী জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হলে আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

পরবর্তী তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা প্রতিটি অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ৫ জনের নামে মৃত্যুদণ্ডের রায় প্রদান করেন। রায় হওয়ার পর পলাতক অবস্থায় দুই আসামি আব্দুর জব্বার ও রঞ্জু মিয়া মারা যায়। আরও দুইজন আসামি জাছিজার রহমান ও মোন্তাজ আলী বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলার শুনানিতে হাজিরা না দেওয়ায় আব্দুল ওয়াহেদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। এর পরপরই নিজ এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসে এবং সাভার এলাকায় কিছুদিন আত্মগোপনে থাকেন। এরপর সে একটি তাবলিগ দলের সাথে যুক্ত হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় তাবলিগ করে আত্মগোপনে থাকেন।  

বাংলাদেশ সমময়: ১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩
পিএম/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।