ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গুলজা গণহত্যাসহ উইঘুর নির্যাতনের আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩
গুলজা গণহত্যাসহ উইঘুর নির্যাতনের আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি

ঢাকা: জাতিসংঘের অধীনে গুলজা গণহত্যাসহ উইঘুর মুসলমানদের ওপর চীন সরকারের চালানো নির্যাতন তদন্তের দাবি জানিয়েছে ইসলামিক প্রগতিশীল জনতা ফ্রন্ট। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘উইঘুর মুসলিমদের মুক্তি আর কতদূর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব দাবি জানায় দলটির নেতারা।

গুলজা গণহত্যার ২৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ইসলামিক প্রগতিশীল জনতা ফ্রন্ট।
 
সভায় লিখিত বক্তব্যে ইসলামিক প্রগতিশীল জনতা ফ্রন্টের আহ্বায়ক মাওলানা আতাউর রহমান আতীকি বলেন, ভৌগলিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিবেচনার মারপ্যাঁচে উইঘুর মুসলিমদের ইতিহাস সংগ্রাম, নির্যাতন ও নিষ্ঠুরতায় পরিপূর্ণ। ফিলিস্তিনি, মুর, রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে মানুষ জানলেও চীনাদের রক্ষণশীল ও নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ব্যবস্থার কারণে উইঘুরদের বাস্তব পরিস্থিতি ও গুলজা ট্রাজেডি সম্পর্কিত তথ্য সাধারণ পর্যায়ে এখনো স্পষ্টভাবে পৌঁছায়নি।

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৭ সালের জানুয়ারির শেষ সময় থেকে শুরু করে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের গুলজা শহরে স্বাধীনতাকামী মুসলিমদের ওপর চীন সরকারের দমন-নিপীড়নের দুঃসহ ঘটনা গুলজা গণহত্যা নামে পরিচিত। এ সময় ২০০ মানুষকে একসঙ্গে হত্যা করা হয়। অসংখ্য মানুষ আহত হওয়ার পাশাপাশি ১ হাজার ৬০০ মুসলিমকে সরকারি হিসেবেই গ্রেপ্তার করা হয়। নিরস্ত্র জনতার ওপর এমন আগ্রাসনের ফলে অনেকই চীন থেকে পালিয়ে যায়। তারা পালিয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তানে গেলে সেখানেও রেহাই হয়নি। তৎকালীন আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের মুখে পড়ে ইতিহাসের ঘৃণিত ও কুখ্যাত গুয়ান্তানাম বে কারাগারে নতুন ঠিকানা হয়।

তিনি আরও বলেন, এমনকি চৈনিক বাহিনী মার্কিনিদের সহায়তায় সেখানেও জিজ্ঞাসাবাদের নামে ব্যাপক শারিরীক ও মানসিক নিপীড়ন চালায়। সেই বন্দিদের নিজ ধর্ম বিরোধী শিক্ষা দেওয়া হয়, মান্দারিন ভাষা শিখতে বাধ্য করা হয়, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে উৎসাহ প্রদানসহ নানা রকম মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়।  

তিনি আরও বলেন, চীন সরকার মানবাধিকারকর্মী, সংবাদকর্মী, জাতিসংঘের কর্মকর্তা এমনকি সংবাদ সংগ্রহে আগ্রহী এমন কাউকে চীনের উইঘুরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। পুরো পৃথিবীকে অন্ধকারে রেখে তারা এসব অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরপরও সামান্যতম সংবাদ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যা দেখে ও শুনে আমরা হতবাক হয়েছি। পুরো বিশ্বের মানুষ এটা মেনে নিতে পারেনি। আমরা চীনা সরকারের এ ধরনের গর্হিত অপরাধ কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এ সময় তিনি জাতিসংঘের অধীনে এসব ঘটনা তদন্তের দাবি জানান। পাশাপাশি ওআইসি ও মুসলিম বিশ্বকে উইঘুরদের রক্ষায় জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবু জাফর কাসেমি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা শহিদুল্লাহ আনসারী, ইসলামী মুভমেন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খায়রুল আহসান, ফেনী আলিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩
এসসি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।