ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তালা ঝুলছে শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
তালা ঝুলছে শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে আজ (বুধবার) সকাল থেকে তালা ঝুলছে। সেখানে কর্মরত সব নকল নবিশরা কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান করছেন।

অপরদিকে দলিল লেখক সমিতি তাদের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন। এতে করে শিবগঞ্জের সব ধরনের দলিল নিবন্ধন ও লেখার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) থেকে এমন পরিস্থিতি শিবগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবারে জনরোষে পড়ে মারধরে আহত হন ইউসুফ আলী। তারই জেরে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে তালা ঝুলছে। কে বা কারা এ সাবরেজিস্ট্রারের উপর হামলা চালিয়েছে সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলছেন না।

নকল নবিশদের সভাপতি সারওয়ার জাহান বলেন, মঙ্গলবার আমাদের সাবরেজিস্ট্রারকে মারধর করা হয়েছে। সেই প্রতিবাদে কার্যালয় বন্ধ রয়েছে।  

কর্মবিরতি চলছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার নাই তাই কাজও বন্ধ।  

সাবরেজিস্ট্রারকে মারধরের ঘটনার সম্পর্কে কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

এ বিষয়ে দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক সিলু বলেন, ঘটনার সময় আমি দলিল লেখার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। পরে শুনি সাব রেজিস্ট্রার মারধরের শিকার হয়েছেন। খবর পেয়েই তাকে দেখতে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যাই। আমার সমিতির কোনো সদস্য এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। বহিরাগতরা এসে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার বজলার রশিদ সনুর দাবি, দলিল লেখকদের হয়রানির জের এবং ভুক্তভোগী এক নারী ১৫ মাস ধরে তার স্বামীর পেনসনের টাকা ছাড় করার ঘটনায় জনরোষ বাড়ে। এ থেকে সাবরেজিস্ট্রারের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

একই দাবি করেন শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম।  

তিনি বলেন, উপজেলা অ্যাকাউন্স অফিসারের কাছ থেকে জানতে পারি অসহায় এক নারী তার স্বামীর পেনশনের টাকা ছাড় করার জন্য ১৫ মাস ঘুরছেন সাবরেজিস্ট্রি অফিসে। বিষয়টি জানার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং অন্যান্য কয়েকজন অফিসারকে নিয়ে সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে গিয়ে দ্রুত পেনশনের কাজটি নিষ্পত্তি করতে বলে চলে আসি। এর ২ ঘণ্টা পর হামলার ঘটনা ঘটে।

সাব রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে দলিল লেখক, ডাক্তারসহ বিভিন্ন পেশাজীবিদের দলিল আটকে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

একই অভিযোগের কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।  

এসব বিষয়ে জানতেসাব-রেজিস্ট্রার ইউসুফ আলীর সঙ্গে  একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে তালা ঝুলছে জানালে শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ চৌধুরি জোবায়ের হোসেন বলেন, এ বিষয়ে থানা এখবধি কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।

বাংলাদেশ রেজিষ্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অহিদুল ইসলাম ও মহাসচিব এস এম শফিউল বারী স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে অভিযোগ আনা হয়েছে, সাবরেজিস্ট্রার মো. ইউসুফ আলীকে তার এজলাস কক্ষে দায়িত্ব পালনের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আবুল হায়াত শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার ও তার নির্দেশে পরিকল্পিতভাবে হামলা করে
মারাত্নকভাবে জখম করেন। সেই সঙ্গে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠ বিচার না হওয়া পর্যন্ত সব সাব-রেজিষ্ট্রি কার্যালয়ে কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে এ প্রতিবাদ লিপি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি জেলা রেজিস্ট্রার আফছানা বেগম।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
এসএএইচ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।