ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রেলসেতুতে নাট-বল্টুর পরিবর্তে কাঠের কুচি ব্যবহারের অভিযোগ

সুমন কুমার রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
রেলসেতুতে নাট-বল্টুর পরিবর্তে কাঠের কুচি ব্যবহারের অভিযোগ

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে রেলসেতুর স্লিপার ক্লিপে নাট-বল্টুর পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠের কুচি। এটি অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনা সত্য।

ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রেলপথের কালিহাতী উপজেলার কয়েকটি রেলসেতুর কাঠের অর্ধেক স্লিপার নষ্ট হয়ে গেছে। আর নষ্ট হওয়া স্লিপারের লোহার ক্লিপে নাট-বল্টুর (ডগ ক্লিপ) পরিবর্তে দেওয়া হয়েছে কাঠের কুচি।

এছাড়া অনেক স্লিপারে ক্লিপ লাগানো নাট-বল্টু ছাড়াই ঝুঁকি নিয়ে রেলপথে চলছে ট্রেন। এছাড়া ঝুঁকিতে রয়েছে সেতুগুলোও। তবে রেলপথ মেরামতে থাকা শ্রমিকরা জানিয়েছেন অনেক নাট-বল্টু চুরি এবং মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণেই কাঠের কুচি লাগানো হচ্ছে। এতে করে ট্রেন চলাচলে কোনো অসুবিধা হবে না বলে জানিয়েছেন তারা।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঈশ্বরদী থেকে ঢাকার জয়দেবপুর পর্যন্ত ৩০৪ কিলোমিটার রেলপথের বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে কালিহাতীর এলেঙ্গা পর্যন্ত ছোট-বড় ছয়টি রেল সেতু রয়েছে। এর মধ্যে প্রত্যেকটি সেতুতেই স্লিপার আটকানো লোহার ক্লিপ থাকলেও পাশাপাশি অনেকাংশেই লোহার ক্লিপের পরিবর্তে লাগানো হয়েছে কাঠের কুচি। এছাড়া কোথাও ক্লিপগুলো উঠে যাচ্ছে আবার সেতুর আশপাশের লাইনে অনেকগুলো ক্লিপ নেই।

এ রেলপথ দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে ঢাকা-উত্তরবঙ্গের ট্রেন যাতায়াত করে। তারপরও গুরুত্বপূর্ণ এই রেলপথে কাঠের কুচি ব্যবহার করায় ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ট্রেন চলাচল করছে এই রেলপথে।

বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিন বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা থেকে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পর্যন্ত রেলপথে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা রেলপথ মেরামতের কাজ করছেন। এসময় দেখা যায় প্রতিটি রেল সেতুতেই স্লিপার আটকানো হয়েছে কাঠের কুচি দিয়ে। এসময় কয়েকজন শ্রমিক এগিয়ে এসে সেই কাঠের কুচিগুলো যাতে দেখা না যায় এজন্য হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আরও ভেতরে ঢুকিয়ে দেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাঙ্গাইল ঘারিন্দা স্টেশনের একজন কর্মকর্তা জানান, কোনোভাবেই স্লিপার আটকানোর জন্য নাট-বল্টুর (ডক পিন) পরিবর্তে অন্য কিছুই ব্যবহার করা যাবে না। আর কাঠের কুচি তো কোনোভাবেই নয়। কারণ যখন ট্রেন চলে তখন স্লিপারগুলো ওঠানামা করে। এজন্য এটি স্থীর রাখতে ডক পিন ব্যবহার করা হয় যাতে এটি ওঠানামা না করতে পারে। আর কাঠের কুচি ব্যবহার করলে এটি যে কোনো সময় স্লিপার থেকে ছুটে যেতে পারে। এতে করে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

এ বিষয়ে পিডব্লিউ জয়দেবপুরের এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানান, স্লিপার আটকানোর জন্য যে ডক পিন ব্যবহার করা হয় সেখানে যে প্লেটটি রয়েছে সেটি যাতে চুরি না হয়ে যায় এজন্য কাঠের কুচি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতের টেন্ডারের মাধ্যমে নতুন করে সেগুলো অপসারণ করে ডক পিন লাগানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।