ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মেট্রোরেলে প্রবেশ করছে দেশ

দুর্ভোগ কাটছে মিরপুর-উত্তরাবাসীর

নিশাত বিজয়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২
দুর্ভোগ কাটছে মিরপুর-উত্তরাবাসীর

ঢাকা: বিশ্বের আধুনিক নগর পরিবহন ব্যবস্থায় প্রধান ভূমিকা রাখলেও বাংলাদেশে স্বাধীনতার ৫০ বছরেও ছিল না মেট্রোরেল। সে দুর্ভোগ থেকে যানজটের নগরী ঢাকাকে মুক্তি দিতে মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ।

আর মাত্র ৫ দিন পর বহুল কাঙ্ক্ষিত মেট্রোরেল দুরন্তগতিতে ছুটে চলবে। আগামী ২৮ ডিসেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল চালুর মহেন্দ্রক্ষণের উদ্বোধন করবেন।

মিরপুর-১০ এলাকার ব্যবসায়ী শাহজালাল হোসেন বলেন, মেট্রোরেরেল জন্য সবচেয়ে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন  মিরপুরবাসী। অনেকের ব্যবসাও বন্ধ হয়ে গেছে। এবার মিরপুরবাসী দুর্ভোগ সহ্য করার সুফল পাবে।  

রাজধানীতে পড়তে আসার পর থেকে যানজটের কবলে পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী  খাদিমুল বাশার জয়।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, রাজধানীবাসীকে যে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হতো সেটা থেকে মুক্তি দিবে মেট্রোরেল। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজধানীবাসীকে যানজটের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি এনে দেওয়ায়।  

শ্যাওড়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মুন্না হোসেন  বলেন, মিরপুরে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের জন্য বাসা থেকে বের হলেই ধুলাবালি, খানাখন্দের নানা সমস্যা হতো। কিন্তু এখন সমস্যাগুলোর সমাধান হচ্ছে।

একই এলাকার আরেক বাসিন্দা শামীম হোসেন বলেন,  অফিস উত্তরা হওয়াতে যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় লাগতো। মাঝেমধ্যে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা লেগে যেতো, এখন আশা করি এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। কিন্তু মেট্রোরেল চালু হলে মিরপুর থেকে খুব সহজে উত্তরায় যাওয়া যাবে।

সরেজমিন শুক্রবার মিরপুরে গিয়ে দেখা যায়, মিরপুর রোডের রাস্তায় মেট্ররেলের মালামাল আগে যেখানে রাস্তার উপরেই থাকতো সেটা  এরই মধ্যে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। একইসঙ্গে সম্প্রসারিত হয়েছে মিরপুরের রাস্তা।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন উত্তরা-মিরপুরবাসী সুবিধা পাবেন।  

এ কথা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক সাইফুন নেওয়াজ  বলেন, মেট্রোরেল একটি পরীক্ষিত যাতায়াত মাধ্যম। এর সুবিধাটা ধীরে ধীরে সবাই পাবেন। কিন্তু প্রথম সুবিধাভোগী হবে মিরপুরবাসী। এর পরে যারা উত্তরা থেকে মিরপুরের উদ্দেশে যাতায়াত করবেন তারাও সুবধিাভোগী হবেন।

মেট্রোরেলের জন্য অনেক ভোগান্তিতে পড়েছিলেন মিরপুররের বাসিন্দারা। এখন মিরপুররের রাস্তা আগে যেগুলো সংকোচিত ছিল, সেগুলোও প্রশস্ত হবে বলে মনে করেন এ যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ।

অধ্যাপক সাইফুন বলেন, মিরপুরের বাসিন্দা কেউ যদি উত্তরায় যেতে চায় তাহলে ২০ মিনিটের মধ্যে মেট্রোরেলে চড়ে যেতে পারবে। আগে যেখানে বাসে ১ থেকে ২ ঘণ্টাও লেগে যেতো।

এদিকে আগামী ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগারগাঁও'র বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে মেট্রোরেল উদ্বোধন করবেন। এজন্য নিরাপত্তায় আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ি পর্যন্ত মেট্রোরেল সংলগ্ন এলাকার ভবনের বাসিন্দাদের জন্য সাতটি নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ।  


নির্দেশনাগুলো হলো:

১. কোনো ভবন বা ফ্ল্যাটে আগামী ২৯ ডিসেম্বরের আগে নতুন ভাড়াটিয়া উঠতে পারবেন না।

২. কোনো ভবনের কমার্শিয়াল স্পেসে ২৮ ডিসেম্বর নতুন কোনো অফিস, দোকান, রেস্তোরাঁ খোলা যাবে না।

৩. ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল সংলগ্ন কোনো ভবনের বেলকনি ও ছাদে কাপড় শুকাতে দেওয়া যাবে না এবং কেউ দাঁড়াতে পারবেন না।

৪. ওইসব এলাকার ভবন, বিল্ডিং বা ফ্ল্যাটে ওইদিন কোনো ছবি বা ফেস্টুন লাগানো যাবে না।

৫. মেট্রোরেল সংলগ্ন কোনো ভবনের কমার্শিয়াল স্পেসে বা আবাসিক হোটেলে ২৮ ডিসেম্বর কেউ অবস্থান করতে পারবেন না।

৬. ওই এলাকার কোনো ভবন বা ফ্ল্যাটে যদি বৈধ অস্ত্র থাকে, তা ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে থানায় জমা দিতে হবে।

৭. মেট্রোরেলের দুই পাশের সব ব্যাংক বা এটিএম বুথ ২৮ ডিসেম্বর সকাল থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলাকালীন পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২৮ ডিসেম্বর উদ্বোধনের পর ২৯ ডিসেম্বর থেকে যাত্রীদের জন্য মেট্রোরেল উন্মুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২২  
এনবি/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।