ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লন্ডন

অ্যাডভেঞ্চার আমাজন-২

জাগুয়ার ও বিষাক্ত সাপের আতঙ্ক নিয়ে জঙ্গলে

সৈয়দ আনাস পাশা, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৫
জাগুয়ার ও বিষাক্ত সাপের আতঙ্ক নিয়ে জঙ্গলে ছবি: মাহাথির পাশা ও নাহিয়ান পাশা/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পূর্ব প্রকাশের পর
আমাজন রেইনফরেস্ট, ব্রাজিল থেকে: বাঘ প্রজাতির প্রাণী জাগুয়ার ও বিষাক্ত সব সাপের আতঙ্ক নিয়ে ২২ ডিসেম্বর আমাজনের গভীর অরণ্যে প্রবেশ। বিচিত্র সব বৃক্ষরাজির সঙ্গে অভিযাত্রী দলের পরিচয় হয় এখানে।



বাংলানিউজ প্রতিবেদক ও ব্রিটেন, সাউথ আফ্রিকা, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, ভারত, ফ্রান্স, জার্মানি ও পর্তুগালের পর্যটকদের সমন্বয়ে গঠিত এ দলের নেতৃত্বে ব্রাজিলিয়ান নাগরিক মারকো জে লিমা।

গা ছম ছম করা ভয় নিয়ে অভিযাত্রী দল প্রবেশ করেন আমাজন অরণ্যে। সবার সামনে জন্তু মোকাবেলার অস্ত্র হাতে ইকোপার্ক কর্মী পিউপিউ। জঙ্গলে ঢোকার আগেই অভিযাত্রীদের পা ফেলার আগে ভালো করে তাকিয়ে দেখার সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়। বলা হয়, যেকোনো সময় ব্রাউন রঙের সাপের উপর গিয়ে পা পড়লে বিপদের আশঙ্কা। এই সাপ খুবই বিষাক্ত। পাশাপাশি বাঘ প্রজাতির জাগুয়ার সম্পর্কেও সতর্ক করা হয়।

হঠাৎ করে দেখা মিলতে পারে জাগুয়ারের, এমন আশঙ্কার কথা জানানো হয় সবাইকে। অবশ্য এর সম্ভাবনা সাপের চেয়ে কম। দীর্ঘ দুই ঘণ্টার জঙ্গল অভিযানে বিচিত্র সব বৃক্ষরাজির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় পর্যটকদের। এসব বৃক্ষের মধ্যে বিভিন্ন ওষুধি বৃক্ষও রয়েছে। একটি বৃক্ষের ছাল কাটলে বের হয়ে আসে একধরনের জেলি জাতীয় পদার্থ, যার মধ্যে পাওয়া যায় ভিকস’র গন্ধ।

জঙ্গলে কিন্তু আবার হারিয়ে যাওয়ার ভয় আছে! হারিয়ে গেলে কীভাবে লোকালয়ে ফেরত আসতে হয় জঙ্গলে ঢুকেই সে সম্পর্কে অভিযাত্রী দলকে পন্থা বাতলে দিলেন দল প্রধান মারকো জে লিমা। বললেন, কেউ যদি সঙ্গীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান, তাহলে হাতের ডান দিকে সূর্য রেখে নাক বরাবর যে দিকটি সেটি হলো উত্তর। এভাবে দিক নির্ণয় করেই জঙ্গল থেকে বের হতে হবে।

পাম গাছের পাতার মতো একটি গাছের পাতা দিয়ে ব্যাগ বানানোও শেখানো হয় সবাইকে, যে ব্যাগে করে অনেক কিছু বহন করা যায়। ক্ষুধা লাগলে কোন উদ্ভিদ বা এর পাতা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা যায় তাও চিনিয়ে দেওয়া হয় পর্যটকদের। বিষাক্ত ফলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে এ থেকে দ‍ূরে থাকার পরামর্শও দেওয়া হয় অভিযাত্রী দলকে।

আমাজন ও রিও নিগ্র নদীতে যে ডলফিনের বসবাস মানুষের কাছে তারা নিরাপদ নয়। রিও নিগ্র নদীতে ডলফিনের সঙ্গে সাঁতার কাটতে গিয়ে বাংলানিউজকে এমনটিই জানালেন মাছ বিষয়ক গবেষক মারকো জে লিমা।

বলেন, আসলে কোনো জীব জন্তু নয়, আমরা মানুষই ভয়ঙ্কর। নিজেদের প্রয়োজনে প্রকৃতির সৌন্দর্য জীবজন্তু আমরা হত্যা করি। তিনি জানান, ডলফিনের চোখ যাদুটুনায় ব্যবহৃত হয় বলে তান্ত্রিকরা এটি সংগ্রহের লক্ষ্যে হত্যা করে ডলফিন।

পাশাপাশি স্থানীয় জেলেরা তাদের জাল দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগেও হত্যা করে এ মৎস্যজাতীয় প্রাণীকে। রিও নিগ্র নদীর একটি জায়গায় সাঁতার কাটার লক্ষ্যে ইঞ্জিন বোট থেকে পর্যটকদের নামানো হলে সেখানে দেখা যায় বেশ কয়েকটি ডলফিন।

ছোট ছোট মাছ হাতে নিয়ে গাইড পানি নেড়ে এক ধরনের শব্দ করলে মাছের লোভে বেশ কয়েকটি ডলফিন এসে তখন জড়ো হয় সেখানে। এসময় বেশ কিছুক্ষন চলে মানব-ডলফিনের আড্ডা। একে অপরের গা ছুঁয়ে দেওয়া, ডলফিনের মুখে মাছ তুলে দেওয়া, হঠাৎ উঁকি দেওয়া তুলতুলে শরীরের ডলফিনের সঙ্গে ছবি তোলা এমন করেই কেটে যায় কিছুটা সময়।

আগামী পর্বে থাকবে কুমির, অজগরের গল্প



বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৫
এএ

অ্যাডভেঞ্চার আমাজন-১ : পৃথিবীর ফুসফুসে এক স্রোতে দুই নদী, পানির রং ভিন্ন

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লন্ডন এর সর্বশেষ